সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত
সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। এরই অংশ হিসাবে দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে রুকন সম্মেলন করেছেন। গোপনে বিভিন্ন জেলায় নিয়মিত কর্মী সভায় যোগ দিচ্ছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। কর্মী সম্মেলনে আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিতে বলা হচ্ছে নেতাকর্মীদের। সম্প্র্রতি একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, জামায়াত মনে করে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সরকার পতনের আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের ঐকমত্য রয়েছে। প্রতিবেদনটি ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
‘জামায়াতের আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি’ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের শুরুতে বলা হয়েছে, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গন তৎপর। রাজনৈতিক দলগুলো নিজ নিজ লক্ষ্যে পৌঁছতে নানা কৌশল আঁটছে। জামায়াতে ইসলামীও বসে নেই। তারা বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। সরকার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে আন্দোলনের মাধ্যমে বাধ্য করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই নির্বাচন চায় দলটি। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিমের বক্তব্যের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অতীতে নির্বাচনে কোন দলের কী ভূমিকা ছিল, এটা পর্যালোচনা করি না। বর্তমান দুঃশাসনের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রামে নেমে পড়ব, এটাই আমাদের অঙ্গীকার। দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য আরও সুদঢ় করতে হবে। যোগাযোগ আরও বাড়াতে হবে। সম্মিলিত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন ঘটাব।’ এ ধরনের বক্তব্যের পর সম্প্রতি জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা এলাকায় যোগাযোগ বাড়িয়েছেন।
জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের বক্তব্যের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ঝুঁকি গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন জেলায় জামায়াতের আমিরদের নেতৃত্বে এরই মধ্যে মনোনয়ন বাছাই কমিটি গঠনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।’
জামায়াতের প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দের বক্তব্যের বরাতে বলা হয়, ‘যথাসময়ে নির্বাচন হওয়া দরকার। কিন্তু সেই নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ এবং সব ভোটারের অংশগ্রহণে। সবাই যাতে ভোট প্রয়োগ করতে পারেন সে ধরনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ২০১৪ ও ১৮ সালে গোটা জাতির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। এর থেকে যদি বের হয়ে আসতে হয়, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তারপর নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।’