ভয়াবহ রূপে ডেঙ্গি: মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় কার?
এবার ডেঙ্গিতে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। ২০১৯ সালে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল ডেঙ্গি। সেবার মৃত্যু হয়েছিল ১৬৪ জনের। দুই মাস বাকি থাকতে শনিবার মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে।
চলতি বছর ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৭। আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪২ হাজার। বর্তমানে দেশের হাসপাতালগুলোয় ভর্তি আছেন প্রায় ৪ হাজার রোগী। ডেঙ্গিবাহিত এডিস মশার আক্রমণে এর বিস্তার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় কার?
বিপুল অর্থ খরচের পরও কেনইবা কর্তৃপক্ষ এডিস মশার কাছে পরাজয় বরণ করছে; তা নিয়ে হাজারো প্রশ্ন নগরবাসীর। রাজধানী ঢাকার মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার ফল ভোগ করছে পুরো দেশবাসী। কেননা, ঢাকা থেকে ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। এ বছর ডেঙ্গিতে ১০১ জন ঢাকায় এবং ৬৬ জন ঢাকার বাইরে মারা গেছেন। এরপরও দুই সিটি করপোরেশনের একটিও ডেঙ্গি বিস্তারের দায় নিচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা এডিস মশার প্রজনন রুখতে ব্যর্থ, তারা ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবের জন্য দায়ী। ঢাকা ও সারা দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গি ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর জন্য তাদের দায় নিতে হবে। কেননা সবকিছু জানা ও বোঝার পরও তারা বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন না। এজন্যই ডেঙ্গির প্রজনন নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। বর্তমানে ঢাকায় মশার প্রজনন বৃদ্ধি বা কমার সঙ্গে ঢাকার দুই সিটির খামখেয়ালিপনা এবং কর্তব্যে অবহেলা দায়ী। কোনোভাবেই তারা তাদের এই ব্যর্থতা এড়িয়ে যেতে পারেন না। মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ঢেলে সাজানো না হলে বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ ঘটানো সম্ভব হবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২০১৮ সালে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৬ জন। এর আগে ২০০০ সালে মারা যান ৯৩ জন। এরপর ২০০৬ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১৪০। ২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৯ জন এবং ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গিতে ২৮ জনের মৃত্যু হয়। এ বছরের অক্টোবরে সর্বোচ্চ ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জুনে ১, জুলাইয়ে ৯, আগস্টে ১১ এবং সেপ্টেম্বরে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গি ভাইরাসে।