গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে আওয়ামী স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করা হবে: ড. মোশাররফ
আগামী দিনে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই সরকারকে বিদায় করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে- এজন্য আজকে বাংলাদেশে লোডশেডিং। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, লোডশেডিংকে জাদুঘরে পাঠিয়েছেন। জনগণের প্রশ্ন জাদুঘর থেকে কিভাবে এই লোডশেডিং সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লো। আজকে মানুষের জীবন দুর্বিষহ, তা এই লোডশেডিং এর কারণে। কেন লোডশেডিং আওয়ামী লীগ সরকারের লুটপাট এবং অর্থ পাচারের কারণে। দেশে ডলার নেই। তাই দেশে অর্থনীতি ধ্বংসপ্রাপ্ত, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজ গরিব মানুষ খেতে পারছে না। মধ্যবিত্ত মানুষ দুর্বল হয়ে পড়েছে। অতএব যারা ভোট চুরি করেছে তারা এই অর্থনীতিকে কোনোদিন উদ্ধার করতে পারবে না। যে সরকার দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তাদের দ্বারা মানবাধিকার রক্ষা হবে না। যারা লুটপাট করেছে তাদের দ্বারা এদেশের অর্থনীতি মেরামত করা সম্ভব নয়।’
মোশারফ হোসেন বলেন, আজকে একটাই দাবি এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। সে নির্বাচনে জনগণ নিজের হাতে ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে। যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে এ দেশের জনগণ যে রায় দিয়েছে পরবর্তী সরকার হবে বেগম খালেদা জিয়ার সরকার, তারেক রহমানের সরকার।
বিএনপি’র এই নীতি নির্ধারক বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, রাজপথে ফয়সালা হবে। অতএব রাজপথে ফয়সালা করে এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে হবে। তাই আমাদের একটাই দাবি অনতিবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে এবং জনগণের সরকার নির্বাচিত হয়ে এদেশের সমস্যার সমাধান করবে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না, তাই খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।
‘সরকার জিয়াউর রহমানের পরিবার, বিএনপির পরিবার এবং বিএনপিকে ভয় পায়’ বলে দাবি করেছেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, এই সরকার গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠিত। এই সরকার জনগণের সরকার নয়। যারা ভোট ডাকাতি করে সরকারে এসেছে, যারা ভোট ছাড়া পার্লামেন্টে গায়ের জোরে ক্ষমতায় রয়েছে তারা গণতন্ত্রের সম্মান দিতে পারে না, তারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না।
মোশাররফ বলেন, ৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল, তখন গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। আবার এই সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতা থাকার জন্য গণতন্ত্রকে সর্বস্তরে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার নেই।
‘আজ যখন সারা বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলনরত, যখন তারা নিজেদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তখন স্বাভাবিকভাবে এই গায়ের জোরের সরকার ভীত। আপনারা দেখেছেন সমাবেশগুলোর দুই তিন দিন পূর্বেই সরকার অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট সৃষ্টি করে মানুষকে কষ্ট দেয়। আমাদের সমাবেশকে দুর্বল করার জন্য।’ বলেন মোশাররফ।
বিভাগীয় সমাবেশগুলোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যতগুলো বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে, সকলে দেখেছে সেগুলো সর্বকালের বৃহৎ সভা হয়েছে। ভবিষ্যতে ইনশাল্লাহ যত বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি করুক, তা উপেক্ষা করে সকল সমাবেশ সফল হবে। আজ এই সরকার ভয়ে ভীত। এই সরকার শুধু আমাদের কাছেই নয়; তারা আন্তর্জাতিকভাবেও ধিকৃত। তারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে। এই সরকারের আমলে দেশে মানবাধিকার নেই।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোনা জারি করার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।