‘পরিবহন ধর্মঘট এবং হামলা-মামলা চালিয়ে বিএনপির গণসমাবেশকে বানচাল করতে পারবে না’
বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা, শহর ও মহানগরে ক্ষমতাশীনদের হামলা ও বাধার অভিযোগে এনে বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিভাগীয় গণসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটি।
বুধবার (২ নভেম্বর) দুপুর দেড়টায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সবার পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা, শহর ও মহানগরে আওয়ামী সন্ত্রাসী কার্যক্রমের যে নগ্ন চিত্র ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে তাতে নিঃসন্দেহে এটা প্রমাণিত আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালের গণসমাবেশকে ভণ্ডুল করাই এই ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক অপশক্তির পরবর্তী প্রকল্প। আর সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইতোমধ্যেই সেই একই রাজনৈতিক অপশক্তি ‘বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপ’-এর নামে আগামী ৪ ও ৫ নভেম্বর পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করেছে। এই সরকার জনগণের মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নিতে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে যেভাবে ভেঙেচুরে হাতিয়ার করে নিয়েছে সেভাবে বাস মালিক পক্ষকে এবং এ জাতীয় সব সমিতিকে ব্যবহার করতে চাচ্ছে স্রেফ বিএনপি আয়োজিত বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশকে বানচাল করতে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী বাহিনী উজিরপুর, বাকেরগঞ্জ ও বানারীপাড়ায় বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রস্তুতি সভায় হামলা চালিয়েছে। পটুয়াখালী জেলা শহরে বিএনপির প্রচার মিছিলে আক্রমণ হয়েছে। বরগুনা জেলার যুবনেতা মিজানুর রহমান সৈয়দকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া গৌরনদী-আগৈলঝাড়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার দল ও প্রশাসন যৌথভাবে নিরবিচ্ছিন্ন দমন-পীড়নের মাধ্যমে বিএনপির সামগ্রিক রাজনৈতিক কার্যক্রমকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে রেখেছে। ৫ নভেম্বর গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে দমন-পীড়নের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। দলবাজ প্রশাসন যন্ত্র নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি ও গ্রেফতার চালাচ্ছে।
বেগম সেলিমা রহমান বলেন, গণসমাবেশে যেতে বাধা দিতে ইতোমধ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলের রাস্তাঘাটের মোড়ে মোড়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা চৌকি বসিয়ে সর্বাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষই ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমরা দুঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নির্যাতন-নিপীড়ন, হামলা, মামলা, গ্রেফতার, অবরোধ করে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরের বিভাগীয় গণসমাবেশে যেভাবে জনস্রোত থামাতে পারেনি তেমনি বরিশালেও পারবে না।
তিনি দক্ষিণাঞ্চলের সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন, সরকার পতনের যে আন্দোলন জনগণ শুরু করেছেন ৫ নভেম্বরের গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ সরকার কায়েম করে ভোটাধিকার আদায় করুন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ভোলার চরফ্যাশনে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা বরিশালের সব জায়গায় ঘটছে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের সমন্বয়ে বিএনপিকে দমানোর প্রয়াস চালাচ্ছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী সোহেল বলেন, চট্রগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরের গণসমাবেশগুলো বাধাগ্রস্থ করার জন্য সর্বাত্মক অপচেষ্টা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। বাস মালিক পক্ষকে ব্যাপকভাবে চাপ দিয়ে তাদেরও নাম ব্যবহার করছে সরকারি দল। বিএনপি বাস মালিক পক্ষকে লিখিতভাবে আশ্বস্ত করেছে তাদের দাবিতে বিএনপি নীতিগত ভাবে সমর্থন করে। তবে ৪ ও ৫ নভেম্বর ধর্মঘটের ডাক দেওয়া থেকে বিরত থাকতে তাদের অনুররোধ জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, জহির উদ্দিন স্বপন, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলসিক জাহান শিরিন, আকন কুদ্দুসুর রহমান, মাহবুবুল হক নান্নুসহ জেলা-মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।