দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কেননা তারা মানুষের ভোট, গণতন্ত্র, কথা বলার, মিছিল-মিটিংয়ের অধিকারসহ সব অধিকার হরণ করেছে। এতেই ক্ষান্ত হয়নি তারা মানুষের বাঁচার অধিকারও কেড়ে নিয়েছে।’
সোমবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে নাটোর উপশহর মাঠে সদর উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি ও বিএনপি নেতাদের হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত ওই সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর সহধর্মিণী সাবিনা ইয়াসমিন ছবি, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চু, সদস্য সচিব রুহিম নেওয়ার এবং যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী শাহ আলম।
পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র এমদাদুল হক আল মামুনের সভাপতিতে সমাবেশটি নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়। সমাবেশে আসার পথে পথে নেতাকর্মীরা হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘একসময় মানুষ সঞ্চয়পত্র কিনতো। অথচ বর্তমানে দেশে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ সেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনছে।’
অধিকাংশ মানুষই এখন এক বেলা খেয়ে কোনোরকমে বেঁচে আছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের নামে যে তেলেসমাতি করা হয়েছে তা জনগণের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। ঢাকায় এখন দিনে ছয় ঘণ্টা আর রাতে ৪-৫ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকছে না। দেশের বিদ্যুৎ গেলো কোথায়? সরকার ঘোষণা করেছিল, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে। এজন্য কুইক রেন্টালসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল সরকার।’
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী বছর দেশে দুর্ভিক্ষ হবে। এর কারণ হলো, দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি এবং এতে মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভ বিরাজ করছে তা থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া। ওই দুর্ভিক্ষের ভয়ে মানুষ যাতে থেমে যায়, এর জন্যই ওই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দেশে দুর্ভিক্ষ চলছেই।
কেননা সারা দেশে সব কিছুরই মূল্য অসহনীয়।’
তিনি বলেন, ‘সারা দেশে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে বিএনপি যখন যেখানে সমাবেশ ডাকছে সেখানেই বাধা দিচ্ছে সরকার। এরপরও লাখ লাখ মানুষ বিএনপির সমাবেশে উপস্থিত হয়ে দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে।’
বিশ্ব রাজনীতির উদাহরণ টেনে এই নেতা বলেন, ‘বিরোধীদল সরকারের সমালোচনা করবে, সরকারের অসঙ্গতি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে এটাই স্বাভাবিক। অথচ এমন প্রচলন বিশ্বে থাকলেও বর্তমান বাংলাদেশ তার উল্টো। কেননা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিরোধীদল ধর্মঘট ডাকলেও বাংলাদেশে বিএনপি যখন সমাবেশ ডাকে তখন সরকার আর সরকারি দল ধর্মঘট ডাকে।’