ইভটিজিং-হেনস্তা ও জিম্মি করে টাকা আদায়: ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে মামলা করে ভয়ে কলেজছাত্রী!

0

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাসে বাঙলা কলেজের ছাত্রীকে ইভটিজিং, হেনস্তা ও জিম্মি করে টাকা আদায়ের অভিযোগে গত রোববার (২৩ অক্টোবর) বনানী থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী সুমাইতা লাইছা বুশরা।

এতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের উপ-মানব উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও বনানী থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমাম হাসান শুভসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সাব্বির হাসান রাতুল, সহ-সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম সামি, সহ-সম্পাদক মো. মেহেরাব হোসাইন ইকরাম এবং ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী সৈকত সম্রাট।

এদিকে মামলার পর উল্টো ভয়ে আছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী লাইসা। তিনি বলেন, মামলার পর অভিযুক্তরা এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি। আমাকে প্রতিদিন বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন দেওয়া হচ্ছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি, ভয়ে আছি। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।

জানা গেছে, অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত এবং ক্যাম্পাসে প্রভাবশালী হওয়ায় এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। মামলার প্রধান আসামি ইমাম হাসান শুভ ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতার ঘনিষ্ট হওয়ায় তাকে কেউ কিছু বলছে না।

মামলার এজাহারে ভুক্তভোগী ছাত্রী উল্লেখ করছেন, আমি সরকারি বাঙলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী। গত ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বাঙলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে বনানী থানাধীন সরকারি তিতুমীর কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে যাই। পরীক্ষা শেষে আমি ও আমার বান্ধবী তিতুমীর কলেজের মাঠে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। তখন ইমাম হাসান শুভ মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমাকে উদ্দেশ্য করে জনসম্মুখে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল মুখভঙ্গিতে কথাবার্তা বলে উত্যক্ত করতে থাকেন, যা আমার জন্য মানহানিকর।

এরপর আমরা যে যার বাসায় উদ্দেশ্যে রওনা হই। পথে আমার আরেক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়। তখন ইমাম হাসান শুভ আবারও আমার কাছে এসে উত্যক্ত করতে শুরু করেন। তার মোটরসাইকেলের পেছনে বসা অজ্ঞাতনামা অন্য একজন আমাকে দেখে কটূক্তি ও উত্যক্ত করেন। পরে আমি ও আমার বন্ধু কলেজের বিজ্ঞান ভবনের সামনে পৌঁছালে তারা আবারও আমার পিছু নেয়। তখন বিরক্ত হয়ে একটি ইটের টুকরা শুভর মোটরসাইকেলের দিকে ছুড়ে মারি।

ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, এসময় শুভর সঙ্গে আরও অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জন পর্যায়ক্রমে এসে যোগ দেন। এরপর তারা আমার বন্ধুকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন এবং আমার ছোড়া ইটের টুকরায় মোটরসাকেলের ক্ষতি হয়েছে বলে মিথ্যা অভিযোগ তোলেন। তারা ক্ষতিপূরণ হিসেবে আমার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শুভ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও তারা ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য বেপরোয়া আচরণ শুরু করেন। নিরুপায় হয়ে আমাদের কাছে থাকা তিন হাজার টাকা তাদের দিই এবং কোনো অপরাধ না করেও ক্ষমা চাইতে বাধ্য হই।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com