অস্ট্রেলিয়ান অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ডে মনোনীত ফখরুল কন্যা
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মেয়ে ড. শামারুহ মির্জা অস্ট্রেলিয়ান অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছেন। পেশায় চিকিৎসাবিজ্ঞানী মেয়ের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হওয়ায় দারুণ খুশি এই রাজনীতিক।
শুধুমাত্র মির্জা ফখরুলের মেয়েই নয়, নাজমুল হাসান নামে আরও একজন বাংলাদেশি ২০২৩ সালের অস্ট্রেলিয়ান অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছেন। তারা ‘এসিটি লোকাল হিরো’ ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছেন।
আগামী ৯ নভেম্বর চার ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। এরপর তারা ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি জাতীয় পুরস্কার ঘোষণার দিন অন্যান্য রাজ্য এবং অঞ্চলের পুরস্কারপ্রাপ্তদের সঙ্গে ‘ফাইনালিস্ট’ হিসেবে যোগ দেবেন।
ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ডে কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী কার্লি ব্র্যান্ড মনোনীতদের তাদের এ স্বীকৃতির জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব নেতৃত্বে, স্থানীয় সম্প্রদায়ের উন্নয়নে কিংবা সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবদান রাখাতে- এসিটি পুরস্কারের জন্য মনোনীতরা উল্লেখযোগ্য ছাপ রাখতে পেরেছে।’
দ্য ক্যানবেরা টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, এসিটি অস্ট্রেলিয়ান অব দ্য ইয়ার, এসিটি সিনিয়র অস্ট্রেলিয়ান অব দ্য ইয়ার, এসিটি ইয়াং অস্ট্রেলিয়ান অব দ্য ইয়ার এবং এসিটি লোকাল হিরো-চারটি ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়েছেন ১৬ জন।
এদের কেউ মহাকাশে রকেট উৎক্ষেপণ করেছেন, কেউ মেতে থাকেন হিপ-হপে, কেউ লড়েন মানবাধিকারের জন্য আবার কেউবা শুধু সূঁচিকর্মের মাধ্যমেই জীবন বদলাতে রেখে চলেছেন অবদান।
একনজরে ড. শামারুহ মির্জা
চিকিৎসাবিজ্ঞানী ড. শামারুহ মির্জা অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় সাংস্কৃতিক এবং ভাষাগতভাবে বৈচিত্র্যপূর্ণ বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেছেন। নারীদের প্রতিনিয়ত বিষণ্ণতার সঙ্গে লড়াই তাকে ভাবিয়ে তোলে। পরে তিনি ভিন্ন ভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ডের (সাংস্কৃতিক ও জাতিগত) নারীরা যেন নিরাপদে তাদের নিত্যকার চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা এবং একইসঙ্গে আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে ২০১৭ সালে তিনি ‘সিতারা’স স্টোরি’ নামে একটি সংগঠন সহ-প্রতিষ্ঠা করেন। যেটি স্বেচ্ছাসেবী, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানটি নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নারীদের মানসিক স্বাস্থ্য, গার্হস্থ্য সহিংসতা, নিজের যত্ন এবং দক্ষতা উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করতে সহায়তা করে।
২০২১ সালে সংস্থাটিকে ‘এসিটি মেন্টাল হেলথ মান্থ অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ৪৪ বছর বয়সী শামারুহ নিজেও ‘ক্যানবেরা কমিউনিটি স্পিরিট অ্যাওয়ার্ড ২০২১’ এর চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগী ছিলেন।
এক নজরে নাজমুল হাসান
২০২১ সালের আগস্টে ক্যানবেরায় কোভিড-১৯ লকডাউন ঘোষণার পর নাজমুল হাসান বিনামূল্যে খাবার ও অন্যান্য দ্রব্যাদি বিতরণের সিদ্ধান্ত নেন। শুধুমাত্র একটি ফেসবুক পেজ এবং গুগল ফর্মের মাধ্যমে নাজমুল হাজার হাজার মানুষকে বিনামূল্যে হালাল খাবার, মুদিসামগ্রী ইত্যাদি প্রেরণ করেন। এছাড়াও ২০২১ সালে তিনি আফগান শরণার্থীদের পুনর্বাসনে সহায়তা শুরু করেন।
রেড ক্রসের সমন্বয়ে তার অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘রহিমুনের’ মাধ্যমে এই কাজটি এখনও অব্যাহত রয়েছে। ৪০ বছর বয়সী নাজমুল তার দাতব্য কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তঃধর্মীয় এবং মাল্টি-কালচারাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন।
দ্য ক্যানবেরা টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাজমুল হাসান সমাজে একজন রোল মডেল। এর আগে তিনি ‘এসিটি আউটস্ট্যান্ডিং এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ফর ডাইভারসিটি অ্যান্ড ইনক্লুশন ২০২২’ এ সম্মানিত এবং ‘এবিসি ক্যানবেরা কমিউনিটি স্পিরিটস অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ এর বিজয়ী হন।