জনগণ জেগে উঠেছে, জনগনণকে আর থামিয়ে রাখতে পারবে না সরকার: ড. মোশাররফ

0

বর্তমান সরকারকে হটানো ছাড়া চলমান সংকট থেকে দেশকে বাঁচানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেছেন, লোডশেডিং কেন মিউজিয়াম থেকে জনগণের ঘরে ফিরে এসেছে, এর জবাব সরকারকে জনগণের কাছে দিতে হবে। খুলনার গণসমাবেশের আগে যানবাহনের ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। সেই বাধা অতিক্রম করে জনগণ জেগে উঠেছে। জনগনণকে আর থামিয়ে রাখতে পারবে না সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর ৯ম মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, মিডিয়া আজ ব্যবসায়ীদের দখলে। সরকারকে খুশি করতে ব্যবসায়ীরা মিডিয়াকে সরকারের তাঁবেদারে পরিণত করেছে। যারা সঠিক সংবাদ লেখেন, তাদের অনেকে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন, জেল খেটেছেন।

তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নামে-বেনামে বিভিন্ন আইনের নামে আজ সাংবাদিকদের দাবিয়ে রাখা হচ্ছে। বারবার তারিখ বদলালেও সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট এখনও জমা দেওয়া হয়নি। কারণ সেখানে এমন তথ্য ছিল, যা সরকারের বিরুদ্ধে। এ চার্জশিট জমা দিলে দেখা যাবে, সরকার ফেঁসে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ আজ ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে চলছে মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, যারা দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, তারাই বলছে দেশে নাকি গণতন্ত্রের সুবাতাস বইছে। এটি বানোয়াট কথা। এসব বিষয় জনগণের কাছে তুলে ধরার দায়িত্ব সাংবাদিকদের।

দেশে গণতন্ত্র নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষের ভোটাধিকার নেই, দেশে মানবাধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত হয়েছে যে এ সরকার গায়ের জোরের সরকার।

যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র সম্মেলনের প্রসঙ্গ তুলে এ বিএনপি নেতা বলেন, আমেরিকাতে গণতন্ত্র নিয়ে একটি সম্মেলন হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশ দাওয়াত পায়নি। এ বিষয়ে আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট ব্যাখ্যা দিয়েছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। বাংলাদেশ হাইব্রিড শাসনের দেশ।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে গরিব মানুষ অভুক্ত থাকছে। দারিদ্র্যসীমা ২০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪২ শতাংশে উপনীত হয়েছে। দেশের সর্বত্র বৈষম্য চলছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক বৈষম্যের দেশ হচ্ছে আজকের বাংলাদেশ।

সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর বিষয়ে বিএনপি নেতা বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গিয়াস কামাল চৌধুরী জনপ্রিয় সাংবাদিক ছিলেন। তিনি স্বৈরাচারী এরশাদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ভয়েস অব আমেরিকার কণ্ঠ সংবাদের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের মানুষকে গণতন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন।

আলোচনা সভায় বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, সরকার নিজেদের নামে পত্রিকা বের করছে, আর বিরোধীদল তথা যারা সত্য লেখে তাদের পত্রিকাগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে। তাদের বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার স্বৈরাচারিতায় এরশাদকেও অতিক্রম করেছে।

শহরে চরম লোডশেডিং আর গ্রামে মানুষ বিদ্যুৎ পায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার ও প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকে গেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে। প্রকল্পের বার বার সময় বাড়িয়ে দেশের অর্থ অপচয় করা হচ্ছে। এটা কিসের উন্নয়ন?

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, গিয়াস কামাল সাংবাদিকতার কালো আইনের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন করেছিলেন। আজ তিনি বেঁচে থাকলে বর্তমান স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধেও কথা বলতেন। জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকরা আজ ভালোভাবে কথা বলতে পারছেন না।

সভাপতির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা দিন পার করছেন। তাদের বেতন আলোচনা সাপেক্ষে বলার কারণ হলো- এই সরকারের সাংবাদিকদের দমন পীড়নের ফল। আজ নানা আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করছে সরকার। এখনও সাংবাদিকবিরোধী ৪টি আইন বাস্তবায়নের পথে।

বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন- নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজে সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, ডিআরইউ সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানীসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com