শ্রমিক ও শিল্পের স্বার্থে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি
শ্রমিক এলাকা, কলকারখানাসহ সারা দেশে অসহনীয় লোডশেডিং দূর করা, শ্রমিক ও শিল্পের স্বার্থে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সারা দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে অসহনীয় লোড শেডিং পোশাক শ্রমিকসহ দেশবাসীর জীবনে এক বিপর্যয় ডেকে এনেছে। বর্তমানে সারা দেশে বিদ্যুৎ সংকটে দেশবাসী অশেষ দুর্ভোগের মধ্যে আছে। এই দুর্ভোগে মধ্যবিত্ত এলাকা থেকে শ্রমিকপাড়া কেউই বাইরে না। বরং পোশাকশ্রমিকসহ শ্রমজীবী এলাকায় লোড শেডিং অন্যান্য শহুরে এবং সুবিধাভোগী এলাকা থেকে অত্যন্ত নাজুক। দিনের বেলা ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুৎ না থাকা এমনকি রাতের বেলায়ও লম্বা সময় বিদ্যুৎ না থাকায় দেশবাসীর সাথে পোশাক কারখানার শ্রমিকরাও অত্যন্ত সংকটের মধ্যে পড়েছে। কারখানা থেকে ফিরে এসে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে পানির সমস্যায় গোসল ও রান্নাবান্না করতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে সাভারের রানা প্লাজার সামনে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির রানা প্লাজা শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, অক্টোবর মাস হলেও দেশে গরম তাপদাহ থাকায় এবং ব্যাপক মাত্রায় লোডশেডিংয়ের কারণে শারীরিকভাবেও শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। রাতেও বিদ্যুৎ না থাকার কারণে পোশাক শ্রমিকরা ঠিকমতো বিশ্রাম না নিয়েই কাজে যাচ্ছেন। কারখানায় কাজ শেষ করে বাসায় এলে অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। কোনো কোনো এলাকায় বিদ্যুতের সাথে গ্যাসের সমস্যাও যুক্ত হওয়ায় বিপর্যয় প্রকট আকার ধারণ করেছে।
শ্রমিকদের জীবনে দুর্ভোগ দূর করতে অবিলম্বে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতারা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটের কারণে কেবল পোশাক শ্রমিকের জীবনই নয়, শিল্পও বিপাকে পড়েছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের অভাবে ডিজেল বা জ্বালানি তেল দিয়ে জেনারেটর চালিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে উৎপাদনেও এই সংকটের প্রভাব পড়েছে। রপ্তানি আয়ের শীর্ষখাত পোশাক খাতে উৎপাদনের হার কমছে এবং সংকট ঘনীভূত হতে দেখা দিচ্ছে। এর ফলে অনেক কারখানা কাজের অর্ডার থাকা সত্ত্বেও কারখানার সময় কমিয়ে দিয়েছে। ফলে শ্রমিকদের ওভার টাইমের হারও কমে গেছে।
নেতৃবন্দ আরও বলেন, বর্তমান লাগামছাড়া দ্রব্যমূল্যের এই কালে বিদ্যুৎ সংকট শ্রমিক ও শিল্পকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং উৎপাদন হার কমছে। কমছে ওভার টাইম। অন্যদিকে শ্রমিকদের বাসা বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় শারীরিকভাবে তারা ক্লান্তিতে থাকছে। রানাবান্নার সংকট, পানির সংকটে তারা ক্লান্ত হয়ে নানা শারীরিক সমস্যা নিয়ে বাধ্য হচ্ছে কাজ করতে, যা উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কেবল আন্তর্জাতিক বিশ্ব পরিস্থিতিকে কেবল দায় না দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে দ্রুত উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।