খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি: আরেকটি রিং পরানো নিয়ে ভাবছেন চিকিৎসকরা
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে বলে জানা গেছে। গত জুনে হার্টে রিং পরানোর পর তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীলই ছিল। তবে গত রোববার থেকে আবারো শারীরিক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে বিএনপি প্রধানকে। বেগম জিয়ার হার্টের অন্য দুইটি ব্লকের একটিতে রিং পরানোর বিষয় নিয়েও চিকিৎসকরা ভাবছেন বলে জানা গেছে।
গত রোববার খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে কিছু পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। আর কিছু পরীক্ষার রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। সেগুলো পাওয়ার পর মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা পর্যালোচনা করে হার্টে রিং বসানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে গত রাতে পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ একজন সদস্য জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার জানিয়েছেন, আমি ম্যাডামকে দেখতে গিয়েছিলাম, তার শারীরিক অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়। চিকিৎসা চলছে। দোয়া করবেন।
হার্টে রিং বসানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে চিকিৎসকরা চিন্তাভাবনা করছেন। আগে একটি ব্লকে রিং বসানো হয়েছে। আরো দু’টি ব্লক রয়েছে তার। সেগুলোতে রিং বসানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।
খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, আমি নিজেও অসুস্থ। তাই তাকে দেখতে হাসপাতালে যেতে পারিনি। তবে খবর নিয়ে যতটুকু জেনেছি, তার অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়। বেশ কিছু টেস্ট করা হয়েছে, সেগুলোর রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। সব পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
গত রোববার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে গত ২২ আগস্ট খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসনের হৃদযন্ত্রের কয়েকটি পরীক্ষা ইকো, ইসিজি, আল্ট্রাসোনোগ্রাম ও এক্সরে করা হয়েছিল। সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়ার পরে মেডিক্যাল বোর্ড আরো কয়েকটি পরীক্ষার জন্য জরুরিভাবে হাসপাতালে ভর্তির সুপারিশ করে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়াকে আবারো এভারকেয়ারে নেয়া হয়। এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন খালেদা জিয়া।
সবশেষ গেল ১১ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃৎপিণ্ডের ব্লক অপসারণ করে একটি ‘স্টেন্ট’ বসানো হয়েছিল। ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীতে ব্লক, আর্থ্রাটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
গত বছর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথাও জানান চিকিতসকরা।
নানা জটিলতার উন্নত চিকিৎসার দাবি করে তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার। কিন্তু সাময়িক মুক্তির শর্তের কথা উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।