‘নারীর প্রতি সহিংসতা কমেনি বরং বেড়েছে ভয়াবহভাবে’
ইয়াসমিন হত্যা দিবস উপলক্ষে ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিচার এবং গণপরিবহনে নারীর নিরাপত্তা চেয়ে মানববন্ধন করেছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম। আজ বুধবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করে সংগঠনটি।
সভাপতির বক্তব্যে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রুখশানা আফরোজ আশা বলেন, ইয়াসমিনের ওপর সংগঠিত বর্বরোচিত ঘটনার পর কেটে গেছে ২৭ বছর। কিন্তু নারীর প্রতি সহিংসতা কমেনি বরং বেড়েছে ভয়াবহভাবে। আজ দেশে গণপরিবহন, কর্মক্ষেত্র-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সর্বস্তরে নারীরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২১ সালে সারাদেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ১ হাজার ৩২১ জন নারী। এর মধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৭ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ৯ জন। সমতল-পাহাড়, ঘর-বাহির, পথ-গণপরিবহনে, কর্মক্ষেত্র-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমন কোনো স্থান নেই যেখানে নারীরা নিপীড়নের শিকার হন না।
তিনি আরও বলেন, রাজধানীতে গণপরিবহনে গত ছয় মাসে ৬৩ দশমিক ৪ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। গত এক মাসে কয়েকটি ধর্ষণের খবর পত্রিকাতেই এসেছে। গণপরিবহনে নিরাপত্তা না থাকলে নারীর অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে। কিন্তু নারীর জন্য নিরাপদ গণপরিবহনের দাবি বারবার অবহেলিত হচ্ছে সরকার ও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে। এমনকি গণপরিবহনে ঘটে যাওয়া কোনো নির্যাতনের উল্লেখযোগ্য কোনো বিচারও পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
উপস্থিত বক্তারা বলেন, নারী-শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যা এসব অপরাধের বিচার না হওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় কারণ অপরাধীদের সরকার ও প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতি। অর্থ ও ক্ষমতার শক্তি দিয়ে এরা সব অপরাধ থেকে পার পেয়ে যায়। মাদক, পর্নোগ্রাফি, নারী শিশু পাচার নির্যাতন-ধর্ষণ-হত্যা এসব অপরাধমূলক ঘটনার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের যুক্ত থাকার খবর প্রায়ই সামনে আসে। ক্ষমতায় থাকলে যেকোনো অপরাধ করে পার পাওয়া যাবে, এই তাদের মনোভাব ও বাস্তবতা। যেখানে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নেই, সেখানে নারী-শিশু নির্যাতন বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।