দেশের সব কার্যক্রম চলমান রেখেও ৫০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব
দেশের সব কার্যক্রম চলমান রেখেও ৫০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব বলে মনে করে গ্রাহক অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে সংগঠনটি।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এমনটাই দাবি করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিদ্যুতের লোডশেডিং না করেও সরকারি-বেসরকারি সব কার্যক্রম সচল রেখে এবং মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রেখে বর্তমান ব্যবহৃত জ্বালানির ৫০ শতাংশ সাশ্রয় করা সম্ভব। এজন্য উন্নত দ্রুতগামী সবার সাধ্যের মধ্যে ডিভাইস ইন্টারনেট ও সাশ্রয়ী মূল্যে সেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও জ্বালানি সংকটের জোরে আমাদের বাংলাদেশও কাঁপছে। এরইমধ্যে সরকার গত মাসে দোকানপাট ও শপিংমল রাত আটটার মধ্যে বন্ধ ঘোষণার পাশাপাশি এক ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের ঘোষণা দিয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা। তাতেও যখন হচ্ছে না তখন সোমবার (২২ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ২৪ আগস্ট থেকে সব সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিস সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে। স্কুল-কলেজ সপ্তাহে দুদিন বন্ধ থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে। এসব পরিকল্পনায় সত্যিই কি জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব, না কি সরকারি সেবায় নাগরিক ভোগান্তি আরও বাড়বে?
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমাদের পরামর্শ হচ্ছে যদি দ্রুতগতির ইন্টারনেট সবার জন্য নিশ্চিত করা যায় পাশাপাশি স্বল্প মূল্যে ডিজিটাল ডিভাইস সরবরাহ করা সম্ভব হয় এবং সেবার মূল্য হাতের নাগালে রাখা যায় তাহলে ঘরে বসেই বা হোম অফিসের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় পরিশ্রম করে দ্রুতগতিতে সব সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় কাজে আরও উন্নয়ন করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন সবাইকে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা ও সাইবার নিরাপত্তা ব্যবহারে সক্ষম করে তোলা।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকিং লেনদেনে আমরা যেখানে ঘরে বসে এমএফএস-এর মাধ্যমে করতে পারি সেখানে উচ্চমূল্যের সার্ভিস চার্জ, লেনদেনের সীমা নির্ধারিত থাকা, আন্তঃব্যাংক লেনদেনে জটিলতা, এজেন্ট ব্যাংক সম্পর্কে মানুষের স্বচ্ছ ধারণা না থাকা এবং অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ থাকায় কোটি কোটি গ্রাহককে প্রতিদিনই বাণিজ্যিক শাখাগুলোতে দৌড়াতে হয়। এক্ষেত্রে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে কোটি গ্রাহককে ঘরে বসে লেনদেন করানো যেতে পারে। এর মাধ্যমে এ সেবা থেকেও ৫০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব।
তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ও চাহিদা মেটাতে বাজারে নাগরিকদের যেতেই হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ই-কমার্স হতে পারতো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম। কিন্তু ই-কমার্সের প্রতারণার যে ভয়ংকর চিত্র এরইমধ্যে দেশবাসী দেখেছে তার বিরূপ প্রভাব পড়েছে ই-কমার্সের গ্রাহকদের মধ্যে। তবে এখনো যদি ই-কমার্সের নিরাপত্তা, ন্যায্য বা সঠিক মূল্যে মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হয় এবং একইসঙ্গে সার্ভিস চার্জ ফ্রি করা যায় তাহলে পাঁচ থেকে সাত কোটি পরিবারের দৈনিক বাজারের যাতায়াত থেকেও প্রায় ৫০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় করা সম্ভব।