নিরাপদ এবং টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের ধৈর্য ধরতে বললেন মিশেল
ক্সবাজারের উখিয়ায় বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনসহ নানান বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাচেলেত।
টেকসই ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের একটু ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকালে মিশেল রোহিঙ্গা শিবিরে পৌঁছে রোহিঙ্গা নারী, ধর্মীয় নেতা ও রোহিঙ্গা যুবকদের সঙ্গে পৃথক, তিনটি বৈঠক করেন। এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাসের পাশাপাশি নিরাপদ এবং টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য একটু অপেক্ষা করতে বলেন।
সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাচেলেতের নেতৃত্বে ছয় সদস্যর প্রতিনিধিদল উখিয়ার ক্যাম্প ৪ এক্সটেনশন-এ পৌঁছান।
প্রথমেই যান জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) নিবন্ধন ক্যাম্প পরিদর্শনে। সেখান থেকে তিনি একই ক্যাম্পে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার ই-ভাউচার সেন্টার পরিদর্শন করেন।
ইয়ান ত খোলা জেলহানা- রোহিঙ্গা শিবিরে চলমান জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে ক্যাম্প-৪ এ ব্যাকের নারীবান্ধবকেন্দ্রে ৯ জন নারীর সঙ্গে বৈঠক করেন জাতিসংঘের ওই প্রতিনিধি।
এ বৈঠকে অংশ নেওয়া রোহিঙ্গা নারী কামরুননেছা (৫০) বলেন, ‘মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে এ পর্যন্ত পাঁচবার বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছি। বাংলাদেশ আমাদের আশ্রয় দিয়েছে, খাওয়াচ্ছে এটা ঠিক। আমরা এখানে আরাকানের চেয়ে ভালো আছি, এসব কথা তাকে আমরা বলেছি।
তিনি আমাদের কাছে নারীদের নিরাপত্তা, সুবিধা অসুবিধার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। বার্মায় চলে যেতে চাই কিনা জানতে জিজ্ঞেস করেছেন। আমি বলেছি, আমরা এখানে জেলখানার মত বসবাস করছি। আমরা নিজ দেশে চলে যেতে চাই। ’
‘ইয়ান অইলদ্দে খোলা জেল। আরাঁ এড়ত্তুন হনমিক্কা যাইত নফারি। ছেলেমেয়েরা লেহা পড়া গরিবারল্লাই বাইরে যাইত নফারে। হন হাজ কাম গরিত নফারি। আঁরা যত তারাতারি এত্তুন আঁরার দেশত যাইতগই চাই। কিন্তু আঁরার বেগ্গুন অধিকার ফেরত দিলে তারপর যাইয়ুম দে,তার আগে নয়’ বলেন কামরুননেছা।
শিবিরের নিরাপত্তা, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন, রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার উন্নয়ন, ধর্মীয় শিক্ষা, মানবাধিকারসহ নানা বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে বলে জানান রোহিঙ্গা ধর্মীয় নেতা মৌলানা মো. জামিল (৪৭)।
তিনি জানান, রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে এসে মিশেল ৮ জন ধর্মীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি শিবিরের অপরাধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। আমরা তাকে বলেছি, আমরা ইমামরা সব সময় মসজিদে এসবের বিরুদ্ধে কথা বলে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করি। খারাপ কাজ না করতে বলি। নেশা না করতে বলি। কিন্তু কেউ শুনে কেউ শুনে না।
একই বৈঠকে থাকা হাফের খুরশীদ বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা আসলেই সেখানে যুদ্ধ শুরু হয়। আমাদের রাইটস ফিরিয়ে না দিলে সেখানে আমরা কীভাবে যাবো। কী করলে আমরা সেখানে যেতে পারবো। কীভাবে আমাদের অধিকার ফিরে পাবো। এটা আমরা তার কাছে জানতে চেয়েছি। তবে সবকিছুর জন্য আমাদের একটু ধৈর্য় ধরার কথা বলেন তিনি।