সরকার সত্যকে আড়াল করে ‘মিথ্যার কারখানা’ হতে পারে না: রব

0

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ভর্তুকি দিয়ে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে- সরকারের এ তথ্য অসত্য ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

জ্বালানি ইস্যুতে আট দফা দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে অনেক বেশি দামে জ্বালানি তেল বিক্রি করে বিপিসি ৪৮ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এরপরও অতিরিক্ত লাভের জন্য জনগনকে জিম্মি করে ৫০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। সরকার সত্যকে আড়াল করে ‘মিথ্যার কারখানা’ হতে পারে না।

বুধবার (১০ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

আ স ম আবদুর রব বলেন, গত ৮ বছরে বিপিসি এ বিপুল পরিমাণ মুনাফা করায় ওই সময়ে তাদের কোনো ভর্তুকি দিতে হয়নি। বরং লাভের টাকা এফডিআর করে সুদ বাবদ মোটা অংকের অর্থ আয় করেছে। তেলের দাম বাড়ানোর আগে যে দামে তেল বিক্রি করছিল তাতেও বিপিসির মুনাফা হচ্ছিল বলে দাবি করেন তিনি।

জেএসডি সভাপতি বলেন, বিপিসির ব্যাংকে জমা করা টাকার পরিমাণ ৩২ হাজার কোটি। সরকার নিয়েছে ১২ হাজার কোটি, আয়কর পরিশোধ করেছে ৫৭০ কোটি টাকা। তারপরও বিপিসি লোকসানে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে বলে সরকারের অসত্য বয়ান জনগণের সঙ্গে প্রতারণার নামান্তর। লোকসানের বানোয়াট দায় চাপিয়ে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিকে যৌক্তিক বলার অপ্রয়াস ভয়ঙ্কর অপরাধ।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র কোনো ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নয়। রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হচ্ছে পরিকল্পিত অর্থনীতি বিকাশের মাধ্যমে উৎপাদন শক্তির ক্রমবৃদ্ধি সাধন। একই সঙ্গে জনগণের জীবনযাত্রার বস্তুগত ও সংস্কৃতিগত মানের উন্নতি করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। জনগণকে জিম্মি করে কোন ব্যবসায় রাষ্ট্র জড়িত হতে পারে না।

এ সময় জনগণের দুর্ভোগ নিরসন এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার প্রয়োজনে আট দফা দাবি জানান তিনি। সেগুলো হলো-

১. আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জ্বালানি তেলের মূল্য নিম্নমুখী হওয়ায় দেশে ৫০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির আদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

২. বিপিসি আন্তর্জাতিক বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে তেল আমদানি মাধ্যমে টাকা পাচার করছে- এ অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে।

৩. তেল আমদানির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শুল্ক ও মূসক ধার্য পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

৪. যারা কম দামে তেল কিনে ভোক্তার কাছে দুইগুণ বা তিনগুণ দামে বিক্রি করে মুনাফা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

৫. উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জনগণের টাকায় মুনাফা করে বিপিসি যেসব বিলাসী প্রকল্প নিয়েছে সেসব প্রকল্প দ্রুত স্থগিত করতে হবে।

৬. বিপিসি যেসব প্রকল্প বৈদেশিক ঋণের টাকায় বাস্তবায়ন করছে তা বন্ধ করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

৭. বিপিসির লাভের টাকা দিয়ে প্রয়োজনে তেলে ভর্তুকি দিতে হবে।

৮. জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের তুঘলকি কাণ্ড, দুর্নীতি ও অপচয় উদঘাটনে কমিশন গঠন করতে হবে।

সবশেষ আ স ম রব বলেন, জনগণকে চরম দুর্দশার দিকে ঠেলে দেওয়ার অধিকার রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই। এর সব দায় সরকারকে বহন করতে হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com