সাবেক সেনাপ্রধান ও সাবেক আইজিপির দুর্নীতির দায় এড়াতে পারে না সরকার: দুদু

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির দায় সরকার এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘সরকার বড় বিপদে আছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী সাদা চামড়া প্রসঙ্গে যে কথা বলেছেন সেটি অত্যন্ত মারাত্মক। আজ প্রধানমন্ত্রীকে জাতির সামনে এই কথাকে স্পষ্ট করে বিবৃতি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। সাদা চামড়া বলতে আপনি (শেখ হাসিনা) কাদেরকে বুঝিয়েছেন?’

তিনি বলেন, ‘আজ আপনি বাংলাদেশের রাস্তা-ঘাট, বন্দর পার্শ্ববর্তী দেশকে দিয়ে দিয়েছেন। আপনি নিজেও স্বীকার করেছেন ভারতকে এমন কিছু দিয়েছেন যেটি ভারত কখনোই ভুলতে পারবে না। সাদা চামড়া বলতে আপনি কাদেরকে বুঝিয়েছেন? সাদা চামড়ারা নতুন রাষ্ট্র বানাতে চাচ্ছে এই কথাটি আপনাকে পরিষ্কার করতে হবে। কারণ এই কথার মধ্যে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন আছে। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’

শুক্রবার (২৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র ফোরাম আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘আমি জানি আপনি অস্থিরতার মধ্যে আছেন। এক সময়ের আপনার সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বর্তমানে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি। প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে আপনার সরকার এর অংশীদার। তার (জেনারেল আজিজ আহমেদ) মাধ্যমে ২০১৮ সালে আপনার সরকার নদী পার হয়েছিল। আপনার একসময়ের পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের সম্পদ এবং ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য বলেছেন আদালত। বেনজীর শুধু আপনার সমর্থকই ছিলেন না, আপনি তার ঘাড়ে চেপে পুলিশের সমর্থনে সরকার গঠন করেছেন।’

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের বিষয়ে দুদু বলেন, ‘আনার সোনা চোরাচালানসহ অনেক অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গত ৭ জানুয়ারি একটি নির্বাচন দেখিয়ে ক্ষমতায় আসার তিন মাসে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) অস্থির হয়ে গেছেন। বাকি সময় এখনো পড়ে আছে।’

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ‘এ দেশে বেগম খালেদা জিয়াকে যারা মিথ্যা মামলায় তথাকথিত বিচারের নামে ছয় বছর জেলখানায় বন্দি রেখেছে তাদের আগামী দিনে জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এদেশের ব্যাংকের টাকা লোপাট, দুর্নীতির করাল গ্রাসে দেশটাকে ধ্বংস করার জন্য তাদেরকে একদিন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘চারদিকের যে পরিস্থিতি এখন, সরকারের অস্তিত্ব নিয়ে টান পড়েছে। সরকার থাকবে কি না, কবে যাবে, কত তারিখে পদত্যাগ করবে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এরপরও আমি শেখ হাসিনাকে বলবো, আপনি পদত্যাগ করে বিরোধীদলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে দিয়ে দেন। তাহলে হয়তো রেহাই পেলে পেতেও পারেন। অন্যথায় যদি আন্দোলনের মাধ্যমে আপনার পতন হয় তাহলে সে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন না।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। অবস্থান কর্মসূচি থেকে যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবি জানানো হয়।

Comments (০)
Add Comment