সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশনে সরকারের লোকেরা বিমূঢ় ও স্তম্ভিত: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘প্রাইম মিনিস্টার ম্যান’ খ্যাত বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দেওয়া স্যাংশনে (নিষেধাজ্ঞা) সরকারের লোকেরা বিমূঢ় ও স্তম্ভিত হয়ে গেছে।

রিজভী বলেন, ‘‘যে সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণরত নেতাকর্মীদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, ‘বিজিবির সবই লেথাল (প্রাণঘাতি) অস্ত্র। কেউ আক্রমণ করলে জীবন বাঁচাতে গুলি করতে পারে।’ পক্ষান্তরে তিনি আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের ওপর গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন। পৃথিবীর সব সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশে কোনো আধাসামরিক সংগঠনের প্রধান এ ধরনের বক্তব্য রেখেছেন, তা আমাদের জানা নেই।’’

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আবারও ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ, দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক হামলা, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ফরমায়েশি রায়ে সাজা ও গ্রেফতারের বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। বাংলাদেশ যেন এখন কারবালা প্রান্তর।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেশ ও জনগণ অপাঙক্তেয়, শুধু ক্ষমতাই আরাধ্য। সরকারের এই নীতি কতৃর্ত্ববাদী শাসনের এক চরম দৃষ্টান্ত।’

এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘ক্ষমতাশালী লোকের পক্ষে যে ব্যক্তি অপকর্ম করে সেই ব্যক্তির ভয়াবহ অপকর্মকে ঢাকতে পারে না রাষ্ট্রের প্রধান ক্ষমতাশালী ব্যক্তি। জেনারেল আজিজের অপকর্মের দায় ডামি আওয়ামী সরকারের। সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ ও সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীররা আওয়ামী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় গেস্টাপো বাহিনীর ন্যায় ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণেও ভূমিকা রেখেছে তারা।’

রিজভী বলেন, ‘ছাত্রলীগ এখন মূর্তিমান আতঙ্ক। নারী ও শিশু নির্যাতন থেকে শুরু করে সব অপকর্মের সঙ্গে এখন জড়িত তারা। রাস্তাঘাট, বাড়িসহ তাদের হাতে মানুষের জীবন অনিরাপদ। এরা নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের শত্রুতে পরিণত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে চলছে এক অর্থনৈতিক নৈরাজ্য। ব্যাংকগুলো টাকার জন্য হাহাকার করছে, ব্যাংক ঋণ বিতরণ করছে আমানতকারীদের অর্থ থেকে। আবার ওই ঋণের অর্থ ক্ষমতাঘনিষ্ঠ লুটেরারা ফেরত দিচ্ছে না। এরই মধ্যে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, আবার চরম ডলার সংকটে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছে না।’

‘অন্যদিকে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ২৬১টি স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেইকেল অর্থাৎ এক ধরনের স্টেশন ওয়াগন ক্রয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী মত দিয়েছেন। যার প্রতিটির মূল্য এক কোটি ৪৬ লাখ টাকা। গত ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের আগেই কেনার কথা ছিল, যা উৎকোচ হিসেবেই মানুষ বিবেচনা করেছে। যাইহোক সেসময় এই ক্রয়ের বিষয়টি স্থগিত রেখে ডামি নির্বাচনে কর্মকর্তাদের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতাস্বরূপ এখন তাদের তা দেওয়া হচ্ছে।’

Comments (০)
Add Comment