উদ্বোধনের আগেই ভেঙে পড়েছে ড্রেন
প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। কিন্তু এর আগেই ভেঙে পড়েছে পানি নিষ্কাশনের জন্য রেললাইনের পাশে নির্মিত ড্রেন। সড়ক ও ড্রেন ধরে রাখার জন্য দুই পাশে ফেলা মাটিও ধসে পড়েছে। ঢাকা-টঙ্গী চতুর্থ রেললাইন ও টঙ্গী-জয়দেবপুর রুটে ডাবল রেললাইন প্রকল্পের বিভিন্ন স্থানে এমনই বেহলা। জনগুরুত্বপূর্ণ বৃহৎ এই প্রকল্পের দৈন্যদশা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, উদ্বোধনের আগেই পাশের ড্রেন ভেঙে পড়ছে, মাটি সরে যাচ্ছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে কাজের মান কী হচ্ছে! রেললাইনের ড্রেন নির্মাণে মানহীন সামগ্রীর ব্যবহার এবং দায়সারা কাজ করায় এমনটি হয়েছে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে চলা এ প্রকল্প কবে শেষ হবে তাও বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রেলের নির্মাণকাজ চলছে ঢিমেতালে। যে গতি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল, সেই গতি নেই। বেশ কয়েকটি স্থানে নির্মাণে ত্রুটি পাওয়া গেছে। বিশেষ করে রেলসড়কে টঙ্গী-জয়দেবপুর অংশে টঙ্গীর হায়দরাবাদ, দক্ষিণখানসহ বিভিন্ন স্থানে রেললাইনের পাশে নির্মিত ড্রেন ভেঙে গেছে। মূল রেলসড়কে পাশে অন্তত ৫ থেকে ৭টি স্থানে এই দৃশ্য দেখা গেছে। ড্রেন ভেঙে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে আছে, নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। এভাবে পানি জমে থাকলে মূল সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ড্রেন ভেঙে পড়ায় ধসে পড়েছে রেললাইনের পাশের মাটিও। মাটি ধসে পড়ায় আশপাশের বাড়িঘরও ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
হায়দরাবাদ এলাকার বাসিন্দা কবির মোল্লা বলেন, যাচ্ছে-তাইভাবে কাজ চলছে। এত বড় প্রকল্পের কাজ এতটা দায়সারা হলে কীভাবে হবে। কাজ চলমান অবস্থায়ই ড্রেন ভেঙে পড়েছে। সম্ভবত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ড্রেনের পাশের গর্তগুলোও ভরাট করা হয়নি। রেলের মাটি সরে যাওয়ায় আশপাশের বাড়িঘরসহ স্থাপনাগুলো ধসে পড়ার ঝুঁকিতে আছে। দ্রুত মেরামত করা হলে আশপাশের বাড়িঘরের বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
একই এলাকার বাসিন্দা আতাউর রহমান বলেন, ঠিকাদারদের গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে এটা হয়েছে। নির্মাণকাজে ফাঁকি ধরতে রেলমন্ত্রীকে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের আহ্বান জানান তিনি।
দক্ষিণখান এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেখছি রেললাইনের কাজ চলছে। মাঝে মধ্যেই কাজ বন্ধ থাকছে। এসব কারণে ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। কাজ শেষ হবে কিনা বুঝতে পারছি না।
এদিকে টঙ্গী থেকে ঢাকা এবং জয়দেবপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত মোট ৬৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের এ প্রকল্প কবে শেষ হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান অ্যাফকন্স ও কল্পতরু পাওয়ার ট্রান্সমিশন লিমিটেড (কেপিটিএল) যৌথভাবে এর নির্মাণকাজ করছে। ৩৬ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আরা কেয়া বলেন, ‘২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটি শেষ করার বর্ধিত মেয়াদ। কবে নাগাদ প্রকল্পটি শেষ হবে সেটি এখনো অনিশ্চিত। কারণ এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের কাজের সঙ্গে এই কাজের যোগসূত্র আছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ চলায় এই প্রকল্পের কাজে ব্যত্যয় ঘটছে।’