দেশে খাদ্য ঘাটতি হওয়ার কারণ নেই: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। একবছর ধরে চাল আমদানি করতে হয় না। উৎপাদিত ধান-চাল দিয়ে দেশের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। দেশে খাদ্য ঘাটতি হওয়ার সুযোগ নেই।
রোববার দুপুরে সিলেট সদর খাদ্যগুদাম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী আরো বলেন, সুনামগঞ্জে সম্প্রতি পাহাড়ী ঢলে বোরো ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হলেও খাদ্যে প্রভাব পড়বে না। আউশ-আমনের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। বোরো আবাদ ও ফলন ভালো হয়েছে। সময়মতো বৃষ্টির কারণে আগামী আউশ ফসলও ভালো হবে। সবমিলিয়ে ধান-চালের শক্তিশালী মজুদ গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, গম আমাদের দেশে উৎপাদন হয় না, বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। গম আমদানি করা হতো ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে। দুই দেশের যুদ্ধের পর আমরা পাশের দেশ ভারত থেকে ৩ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করেছি। পরে যা দরকার পড়বে তাও ভারত থেকে আমদানি করা হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের গম রফতানি বন্ধের বিষয়ে আগাম মন্তব্য করা ঠিক হবে না। ভারত বেসরকারিভাবে রফতানি বন্ধ করলেও সরকারিভাবে গম রফতানি বন্ধ করেনি। হয়তো এক মাস বা ১৫ দিন পর তারাও রফতানি করবে। আমাদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তাদের উৎপাদিত গম তাদেরকে তো বিক্রি করতেই হবে।’
দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছে যেন মসলা পণ্যের দাম গ্রাহকের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। এখন দেশে পর্যাপ্ত পিয়াজ রয়েছে। বেশি পেঁয়াজ আমদানি করলে দেশে কৃষকরা উৎপাদন ছেড়ে দেবে। সেটাই হচ্ছে এখন। আশা করছি পেঁয়াজের দাম আর বাড়বে না।
ভোজ্যতেলের দাম সারাবিশ্বে বাড়ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কেবল বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বে বাড়তির দিকে। ভারতে প্রতি লিটার ২১০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসেবে আমরা ভালো আছি। আরো ভালো থাকার চেষ্টা করছি।
সিলেটে আধুনিক রাইস সাইলো স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। এজন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। জায়গা পাওয়া গেলেই কাজ শুরু হবে। প্রতিটি সাইলো-তে ২৫ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল রাখা যাবে।
কৃষকের ধানের সরকারি দামের বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষকের কাছ থেকে ঘোষণা দিয়ে দাম নির্ধারণ করে ধান কেনা হয়। কৃষকরা বাজারে অন্যের কাছে ধান বিক্রি করে যেন না ঠকে তাই এমনটি করা হয়।
এবার ধানের দাম বাড়ানো হবে না জানিয়ে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ধানের দাম বাড়লে চালের দামও বাড়বে। এতে দেশের মানুষই কষ্ট পাবে। কৃষকদের ধানের বীজ-সার ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। যন্ত্রপাতি কিনে দেয়া হচ্ছে। সরকার সবসময় কৃষকের পাশে রয়েছে।
মন্ত্রী রোববার দুপুরে বিমানযোগে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন। সেখান থেকে সিলেট সদর ও খাদিমপাড়া খাদ্যগুদাম পরিদর্শনে যান। বিকেলে তিনি সুনামগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন এবং সেখানে সোমবার পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
সূত্র : বাসস