আজ শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা
আজ শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা। দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা সাড়ম্বরে উদযাপন করবে। ‘জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক’—এ অহিংস বাণীর প্রচারক গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব, বোধিপ্রাপ্তি আর মহাপরিনির্বাণ-এর এই স্মৃতি বিজড়িত দিনটিকে বুদ্ধপূর্ণিমা হিসেবে পালন করেন ভক্তরা।
গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিজ্ঞান ও নির্বাণ লাভ এই ত্রিস্মৃতি বিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বিশ্বের সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত।
বৌদ্ধ ধর্ম মতে, আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে এ দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে এর (বৈশাখী পূর্ণিমা) অপর নাম দেওয়া হয় ‘বুদ্ধপূর্ণিমা’।
বৌদ্ধ সাহিত্য থেকে জানা যায়, পূর্বজন্মে বোধিসত্ত্ব সব পারমি পূরণ করে সন্তোষকুমার নামে যখন স্বর্গে অবস্থান করছিলেন, তখন দেবগণ তাকে জগতের মুক্তি এবং দেবতা ও মানুষের নির্বাণ পথের সন্ধান দানের জন্য মানুষের মধ্যে জন্ম নিতে অনুরোধ করেন। দেবতাদের অনুরোধে বোধিসত্ত্ব সব দিক বিবেচনা করে এক আষাঢ়ী পূর্ণিমায় স্বপ্নযোগে মাতৃকুক্ষিতে প্রতিসন্ধি গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী এক শুভ বৈশাখী পূর্ণিমায় জন্ম নেন। তার জন্ম হয়েছিল লুম্বিনী কাননের শালবৃক্ষ ছায়ায় উন্মুক্ত আকাশের নিচে। তার কাছে জাতি, শ্রেণি ও গোত্রের কোনো ভেদাভেদ ছিল না। তিনি মানুষকে মানুষ এবং প্রাণীকে প্রাণী রূপেই জানতেন এবং এর প্রাণসত্তার মধ্যেই যে কষ্টবোধ আছে, তা তিনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতেন। তাই তিনি বলেছিলেন, ‘সবেব সত্ত্বা ভবন্তু সুখীতত্তা’ জগতের সব প্রাণী সুখী হোক।
সারা দেশে রাষ্ট্রীয় ছুটির এদিনের শুরুতে শান্তি, শোভাযাত্রা এবং বৌদ্ধ মঠ ও মন্দিরগুলোতে দিনব্যাপী প্রদীপ প্রজ্জ্বালন, পূজা ও প্রার্থনার আয়োজন করে বুদ্ধের আদর্শ অনুসারী বৌদ্ধ সম্প্রদায়। এ উপলক্ষ্যে রাজধানীসহ দেশজুড়ে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে বুদ্ধ পূজা, প্রদীপ প্রজ্জ্বালন, শান্তি শোভাযাত্রা, ধর্মীয় আলোচনা সভা, প্রভাত ফেরি, সমবেত প্রার্থনা, আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মানবজাতির সর্বাঙ্গীণ শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।