‘ত্বকী হত্যায় যেনতেন অভিযোগপত্রে বিচার হলে মানবো না’
সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বী বলেছেন, আমরা বারবার বলে আসছি সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান এবং আজমেরী ওসমানসহ সবাই মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। সুতরাং তাদের বাদ দিয়ে যেনতেন অভিযোগপত্র দিয়ে বিচার সম্পন্ন করা হলে আমরা কখনো মানবো না।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে শহরের চাষাঢ়া এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত মোমবাতি প্রজ্বলন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচারের দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের মাসিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই মোমবাতি প্রজ্বলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
রফিউর রাব্বী বলেন, আমরা শুধু ত্বকী হত্যার বিচার চাই না। ত্বকীর সঙ্গে সব হত্যার বিচার চাই। সাগর রুনি ও তনু হত্যার বিচার হয় না কেন আমরা জানি। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় নির্দেশে ৯ বছর ধরে ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ রয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাচ্ছি আপনি ত্বকী হত্যার বিচারের নির্দেশ দেন। আমরা দাবি জানাচ্ছি ১৬৪ ধারা জবানবন্দির মধ্য দিয়ে যে ঘাতকদের নাম এসেছে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসেন। জবানবন্দিতে যাদের নাম আসে তারা গ্রেফতার হয় না এমন নজির আমার জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে আজমেরী ওসমানের নাম এসেছে। আমরা দাবি জানাচ্ছি অভিযোগপত্র দেওয়ার আগে এই আজমেরী ওসমানকে গ্রেফতার করে তার জবানবন্দি নিয়ে তারপর অভিযোগপত্র পূর্ণ করা হোক। সে কার নির্দেশে হত্যা করেছে এটি স্পষ্ট করতে হবে।
রাব্বী বলেন, দেশের বাইরে যখন প্রতিবাদ শুরু হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তখন সরকারের মন্ত্রীরা মিথ্যাচার শুরু করছে। সরকার বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থায় পরিণত করেছে। সরকার দলীয় যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের বিচার হয় না। দলের বাইরে যারা অপরাধ সংঘটি করে তাদের বিচার করে। যেই ঘটনা সরকারের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় সেই বিচার করতে সরকার বাধ্য হয়। সাবেক সেনা সদস্য সিনহার ঘটনা তারই প্রমাণ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রদীপ সরকার পুরস্কৃত হয়েছিলেন। সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে শুধু বিচার ব্যবস্থা নয় নির্বাচনী ব্যবস্থা মানুষের মৌলিক অধিকার গণতান্ত্রিক অধিকার সবকিছুকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে ত্বকী শহরের শায়েস্তাখান সড়কের বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। পরে ৮ মার্চ সকালে চাড়ারগোপে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে তার মরদেহ পাওয়া যায়। ত্বকী হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে আটজনই পলাতক। আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে দুজন আসামি ইউসুফ হোসেন লিটন ও সুলতান শওকত ভ্রমর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের আটবছর অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি।