রোজায় ইফতার ও আর্থিক অনুদান দেওয়ার গুরুত্ব

0

ভোর রাতে সাহরি দিনশেষে ইফতার করা রোজার দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ইবাদত। উভয় কাজের মাধ্যমেই পূর্ণ হয় রোজা।রমজান জুড়ে এই কাজ দুটির রয়েছে আলাদা গুরুত্ব তাৎপর্য। কেননা রাতের সাহরি খাওয়া সুন্নাত কল্যাণের। যতদিন সময় হওয়ার সঙ্গে ইফতার করা হয় ততদিন রোজাদারের জন্য বরকত কল্যাণ নাজিল হতে থাকে।

যদি কেউ কাউকে ইফতার করায় তার জন্য রয়েছে অতিরিক্ত সাওয়াব তাৎপর্য। যাতে ইফতার গ্রহণকারী ইফতারের আয়োজনকারী কারোরই সাওয়াব কমানো হবে না। রোজাদার গরিব কিংবা ধনী হোক, বন্ধু হোক বা আত্মীয়, দূরের বা কাছের, সেযে হোক না কেন, তাকে ইফতার করালে তাতে উভয়ের জন্য রয়েছে বড় উপকার।

রোজাদারকে ইফতার করানোসাওয়াব বৃদ্ধি এবং গোনাহ মাফের আমল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হাদিসে এসেছে

হজরত জায়েদ ইবনে জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যেব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করাল, তারও রোজাদারের ন্যায় সাওয়াব হবে; তাতে রোজাদারের সাওয়াব বা নেকি বিন্দুমাত্র কমানোহবে না। (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ)

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও ইরশাদ করেছেন, ‘যে রোজাদারকে ইফতার করাল, তাকে পানাহার করাল, তাকেও রোজাদারের সমান সাওয়াব দেওয়া হবে; তাতে তার (রোজাদারের) নেকি বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না।’ (তাবারানি, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক)

এমনকি ইফতারের জন্য কেউ কাউকে দাওয়াত করলে তা গ্রহণ করায় রয়েছে কল্যাণ। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুএর দাওয়াত গ্রহণের একটি বর্ণনা তিনি নিজ ভাষায় তুলে ধরেছেন

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তাঁকে এক নারী ইফতারের জন্য দাওয়াত করল; তিনি তাতে সাড়া দিলেন এবংবললেন, ‘আমি তোমাকে (নারীকে) বলছি, যে ঘরের অধিবাসী কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তাদের জন্য তার অনুরূপসাওয়াব হবে।

নারী বলল, ‘আমি চাই আপনি ইফতারের জন্য আমার কাছে কিছুক্ষণ অবস্থান করুন, বা জাতীয় কিছু বলেছে। তিনিবললেন, ‘আমি চাই নেকি আমার পরিবার অর্জন করুক। (মুসান্নেফে ইবনে আব্দুর রাজ্জাক)

রমজান মাস রোজা বান্দার জন্য আল্লাহ তাআলার এক মহা অনুগ্রহ। আল্লাহ তাআলা মাস রোজাকে কেন্দ্র করে বান্দারজন্য কল্যাণ অনুগ্রহ লাভের অনেক ক্ষেত্র মাধ্যম তৈরি করেছেন। যে সবের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহ অনুগ্রহ কল্যাণ লাভকরতে পারবে। রোজাদারকে ইফতার করানো সব অনুগ্রহের একটি।

রোজা পালনকারীর জন্য আল্লাহ তাআলা কোনো প্রতিদান বা পুরস্কার ঘোষণা না করে তা তিনি নিজে দেবেন বলে ঘোষণাকরেছেন। আর পরকালে রোজাদার জন্য আলাদা করেরাইয়্যানজান্নাত নির্মাণ করেছেন। যে জান্নাতে রোজাদার ব্যতিত আরকেউ স্থান পাবে না।

ইফতার গ্রহণের দাওয়াত আসলে তা গ্রহণ করায়ও রয়েছে সাওয়াব। সাওয়াব প্রদানে আল্লাহ তাআলা কাউকেও কম বেশিকরবেন না। বরং সবাইকে সমান সাওয়াব দান করবেন।

রোজাদারকে আর্থিক সহায়তা

ইফতারের নামে কোনোভাবেই যেন খাবারের অপচয় না হয়। ইফতারের গরিবদুঃখী অসহায়দের আমন্ত্রণ করা জরুরি। গরিবরোজাদারকে আর্থিক দানঅনুদান দেয়াও কল্যাণের। কেননা

কেউ যদি কোনো গরিব রোজাদারকে ইফতারের জন্য আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা করে; তাতে সে ওই টাকায় ইফতারও করল; আবার কিছু অর্থ বাচিয়ে তা দিয়ে সাবলম্বী হলো; এটাও ইফতার করানোর ফজিলতের অন্তর্ভূক্ত হবে। আর গরীব ব্যক্তিওআর্থিকভাবে উপকৃত হবে।

আর ইফতারের দাওয়াত যদি অসহায় গরিবদুঃখীর জন্য হয়, তবে সেখানে ধনী স্বচ্ছল ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ না করাই ভালো।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর রোজাদারদেরকে পারস্পরিক দাওয়াত সদাচরণ বিনিময়ের তাওফিক দান করুন। অস্বচ্ছল, গরিবদুঃখীর মাঝে ইফতার, ইফতার সামগ্রী এবং অর্থ দান করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com