করোনা গেলেও রয়ে যাবে মাস্কের ব্যবহার: গবেষণা

0

বিশ্বে গণিতের চক্রবৃদ্ধি হারের চেয়েও দ্রুত বাড়ছে করোনায় মৃত্যু। পৃথিবীর প্রভাবশালী দেশও মাথা নুয়ে পড়ছে করোনা মোকাবিলায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানীর এত উন্নতি সাধনের পরও করোনা বিস্তার ঠেকানোর কোনও পথ ও পন্থা এখনও কেউ আবিষ্কার করতে পারেনি। করোনা নির্মূলে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হওয়ার পরও একেক পক্ষ থেকে একেক মত দেয়া হচ্ছে। কিন্তু নিশ্চিত করে কেউই বলতে পারছে না- কিভাবে করোনা মহামারি দূর হবে

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে একন পর্যন্ত করোনা মোকাবিলার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে মাস্ক ব্যবহার। 

মানুষের কাছে মাস্ককে পোশাকের মতোই তুলে ধরতে হবে। যেন তারা এটিকে চাপিয়ে দেওয়া কোনো বিধি মনে না করে,বরং ফ্যাশনের অংশ ভাবে। মাস্ক এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী। প্রথমদিকে মাস্ক ব্যবহারে জনমনে অস্বস্তি কাজ করলেও এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু মহামারি কেটে গেলে কি কাটানো যাবে এ অভ্যাস? অনেক দেশ অবশ্য এরইমধ্যে মহামারির পরও মাস্ক পরা বজায় রাখার কথা ভাবছে।

কয়েক সপ্তাহ আগে, ‘সায়েন্স ফ্রাইডে’ নামে একটি ওয়েবসাইটে এ নিয়ে একটি পর্যালোচনা চালানো হয়। সেখানে ওয়েবসাইটটি শ্রোতাদের কাছে প্রশ্ন রেখেছিল, ‘তাদের স্বপ্নগুলোতে কোভিড-১৯ মহামারি কোনো পরিবর্তন এনেছে কি না?’ অনেক শ্রোতারই উত্তর ছিল, ‘হ্যাঁ।’ তাদের স্বপ্নগুলোতে মহামারির প্রভাব প্রগাঢ় হয়ে দেখা দিচ্ছে।

জর্জিয়া সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির মহামারিবিদ আইজাক ফুং জানান, এর আগেও  আমেরিকানরা প্রায় এক শতাব্দী রেশ টেনেছে মহামারির। খুব ভয়ংকর ব্যাপার ছিল সেটি। কিন্তু সাম্প্রতিক মাস্ক ব্যবহার তাদের আগের মনোভাবও বদলে দিতে পারে।

তিনি বলেন, ‘এই করোনা মহামারির সম্মুখীন আমাদের হয়তো একবারই হতে হয়েছে; কিন্তু এটি বদলে দিতে পারে আমাদের জীবন-ভাবনা, জীবনযাত্রা।’

করোনা ভাইরাসের আগের মহামারিগুলোও এভাবেই প্রভাব ফেলে গেছে। ২০০৩ সালে সার্স নামে এক ভাইরাসের কথা কি মনে আছে? চীন, তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশিয়ার কয়েকটি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল ভাইরাসটি। সেই সময়েও মাস্ক পরতে হতো।

ফুং বলেন, ২০০৩ সালের সেই সার্স ইতিবাচক ও নেতিবাচক- দুই ধরনের প্রভাবই রেখে গেছে। তাছাড়া কোভিড-১৯ আমাদের মাস্ক পরার পাশাপাশি হাত ধোয়ার এবং সামাজিক দূরত্ব  বজায় রাখার যে নতুন অভ্যাস শিখিয়েছে, মহামারির পরের সময়কালেও সেগুলো বেশ কার্যকরী হবে। নিয়মিত হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলা এবং মাস্ক ব্যবহার আমাদের ছোটখাট অনেক ফ্লু ও সংক্রমণ রোগ থেকে রক্ষা যেমন করবে, তেমনি আমাদের কাছ থেকে অন্যদের মাঝে রোগ ছড়ানো রোধ করবে।

স্কটল্যান্ডের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ ইউনিভার্সিটির সামাজিক নৃতাত্ত্বিক ক্রিস্টোস লিন্টেরিস মনে করেন, এই মহামারি হুট করেই চলে যাবে না। এমনকি ভ্যাকসিন আসার পরও এই ভাইরাস পুরোপুরি নিঃশেষ  হবে না। বিভিন্ন মৌসুমি জ্বর, ফ্লুর মধ্য দিয়ে ভাইরাসগুলোর পুনরুত্থান ঘটবে। আর সে কারণেই সার্স ও কোভিড-১৯ মাস্ক ব্যবহারের যে অভ্যাস তৈরি করে দিয়ে গেছে, তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই সুফল দেবে। 

ফুং বলেন, লোকজন নিজেদের পোশাক-পরিচ্ছদের সঙ্গে মিল রেখে মাস্ক পরবে। মাস্ক যখন আমাদের পোশাক বা সাজগোজেরই অংশ হয়ে উঠবে, তখন এটি ব্যবহারের প্রতি আগ্রহ বাড়বে মানুষের।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com