করোনার দীর্ঘমেয়াদি উপসর্গগুলো উদ্বেগজনক: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
শরীরের প্রধান অঙ্গগুলোর ক্ষতিসহ কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত কিছু রোগীর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিশ্চিত করার জন্য সরকারপ্রধানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
ডব্লিউএইচওর ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্স চলাকালে গতকাল শুক্রবার জেনেভায় ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, ‘যদিও আমরা এখনো ভাইরাসটি সম্পর্কে শিখছি, তবে এটি স্পষ্ট যে কোভিড-১৯ কেবল মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় না। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের ওপর এই ভাইরাসটির দীর্ঘমেয়াদি মারাত্মক প্রভাব রয়েছে।’
টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে এটিও প্রতীয়মান যে ‘হার্ড ইমিউনিটির’ ধারণাটি ‘নৈতিকভাবে অযৌক্তিক’ এবং ‘অপ্রয়োজনীয়’। সংবাদ সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।
ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস করোনা ভাইরাসের উপসর্গগুলোর বিশদ বর্ণনা করেছেন, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ‘সত্যিই উদ্বেগজনক হারে’ ওঠানামা করে।
এর মধ্যে ক্লান্তি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হওয়া থেকে শুরু করে ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ডসহ প্রধান অঙ্গগুলোর প্রদাহ ও ক্ষতি এবং স্নায়বিক ও মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবগুলোও রয়েছে।
উপসর্গগুলো প্রায়ই বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের শরীরের যেকোনো সিস্টেমকে প্রভাবিত করতে পারে।
টেড্রস আধানম বলেন, ‘সরকারের নভেল করোনাভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবগুলোর স্বীকৃতি প্রদান এবং এ ধরনের রোগীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।’
টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস আরো বলেন, ‘এর মধ্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষ যত্ন ও পুনর্বাসন প্রয়োজন হয়।’
ডব্লিউএইচও প্রধানের মতে, কোভিড-১৯-এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবগুলোর মুখোমুখি মানুষদের অবশ্যই পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করার জন্য সময় দেওয়া এবং যত্ন নেওয়া উচিত।
টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, “আমার কাছে ‘প্রাকৃতিক হার্ড ইমিউনিটির’ ধারণাটি ‘নৈতিকভাবে অযৌক্তিক’ ও ‘অপ্রয়োজনীয়’ মনে হয়। এই পন্থা আরো লাখ লাখ মানুষকে কেবল মৃত্যুর দিকেই ঠেলে দেবে না, এটি করোনাভাইরাস থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার পথ দীর্ঘায়িত করবে।’
টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস ব্যাখ্যা করেন যে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ কেবল তখনই সম্ভব, যখন করোনাভাইরাসের নিরাপদ ও কার্যকর কোনো ভ্যাকসিন বিশ্বব্যাপী সমানভাবে বিতরণ করা হবে।
ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, ‘কার্যকর একটি ভ্যাকসিন না পাওয়া পর্যন্ত সবাইকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে, যা কোভিড-পরবর্তী দীর্ঘমেয়াদি পরিণতি রোধ করার সর্বোত্তম উপায়।’