পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যু: তদন্তে ঘটনাস্থলে পিবিআই

0

সিলেটে পুলিশ হেফাজতে মো. রায়হান আহমদ (৩৪) নামের এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধব‌ার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পিবিআই সদস্যরা ঘটনাস্থল সিলেট বন্দরবাজার পু‌লিশ ফাঁড়ি প‌রিদর্শনে যান।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট কোতোয়ালি থানার উপপ‌রিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল বাতেন ভূঁইয়া সিলেট পি‌বিআই কার্যালয়ে মামলার ন‌থিপত্র হস্তান্তর করেন।

বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পি‌বিআই সিলেটের পু‌লিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ উজ জামান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পি‌বিআই সিলেটের প‌রিদর্শক ম‌হিদুল ইসলামসহ অন্য কর্মকর্তারা। পি‌বিআই সূত্রে জানা গেছে, মামলার বি‌ভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হবে।

পি‌বিআই সিলেটের পু‌লিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ উজ জামান বলেন, ‘তদন্তভার পাওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থল প‌রিদর্শনে এসে‌ছি। আমরা বিস্তা‌রিত পরে জানাব।’

এর আগে গত শনিবার মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করে পরিবার। সকালে তিনি মারা যান। নির্যাতন করার সময় এক পুলিশের মুঠোফোন থেকে রায়হানের পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে টাকা চাওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা সকালে ফাঁড়ি থেকে হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনার শুরুতে ওই ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরের কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হয়েছেন বলে প্রচার চালায়। কিন্তু গণপিটুনির স্থান হিসেবে যেখানকার কথা বলেছিল পুলিশ, সেখানে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের স্থাপন করা ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় এমন কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।

রোববার রাতে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখের তত্ত্বাবধানে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় সোমবার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

নগরের রিকাবীবাজার এলাকার একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্রে চাকরি করতেন রায়হান। সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আখালিয়ার নিহারিপাড়ায় স্ত্রী, ছয় মাস বয়সী মেয়ে, মা ও চাচাকে নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। পুলিশি নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনা পুলিশের অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মামলাটি নিরপেক্ষ কোনো তদন্ত সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের দাবি ছিল পরিবারের।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com