আশুরায় বিশ্বনবির রোজা পালন : কারণ ও ফজিলত বর্ণনা
হিজরি সনের প্রথম মাস মহররম। আল্লাহ তাআলা ঘোষিত সম্মানিত এ মাসের অন্যতম আমল রোজা। এ মাসের রোজা পালনে রয়েছে বিশেষ কারণ। আবার আশুরার রোজার ফজিলত এবং মর্যাদাও অনেক বেশি। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একাধিক হাদিসে এ রোজার ফজিলত ও মর্যাদা ফুটে ওঠেছে।
আশুরার রোজা রাখার কারণ ও নির্দেশ
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় এসে দেখলেন, ইয়াহুদিরা আশুরার দিন রোজা পালন করছে। তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কিসের রোজা?
তারা (ইয়াহুদিরা) বলল, এটা একটা উত্তম দিন। আল্লাহ তাআলা এ দিন বনি ইসরাইল জাতিকে তাদের দুশমন (ফেরাউন)-এর আক্রমণ থেকে নিরাপদ করেছেন। তাই (হজরত) মুসা আলাইহিস সালাম এ দিন রোজা রেখেছিলেন।
তখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমাদের চেয়ে আমিই (হজরত) মুসা (আলাইহিস সালাম)-এর (আদর্শ পালনে) বেশি হকদার। কাজেই তিনি নিজে আশুরার রোজা রাখলেন এবং অন্যদেরকেও রোজা রাখতে বললেন।’ (বুখারি,মুসলিম, ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ, বায়হাকি)
আশুরার রোজার ফজিলত
– হজরত আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি আশা রাখি যে, আশুরার রোজা বিগত এক বছরের গোনাহের কাফফারা হবে।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)
– হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা হলো মুহররম মাসের দোয়া।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি)
– হজরত আবু কাতাদাহ আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আশুরার রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আশুরার রোজা বিগত এক বছরের গোনাহের কাফফারাহ হবে।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)
আশুরার রোজা পালনে করণীয়
মুমিন মুসলমানের উচিত, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ-অনুকরণ ও ফজিলত বর্ণনায় আশুরার রোজা পালনের উপদেশ মেনে যথাযথভাবে এ আমল করা জরুরি। আর এতে জারি হবে সুন্নাত। আর তা পুরো এক বছরের গোনাহের কাফফারা হবে। মিলবে পরকালের নামাজত। পালন হবে হজরত মুসা আলাইহিস সালামের সুন্নাত।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আশুরার ফজিলতপূর্ণ রোজা পালনের তাওফিক দান করুন। সুন্নাতের অনুসরণ ও অনুকরনের তাওফিক দান করুন। রোজা পালনের মাধ্যমে সম্মানিত মাস মহররমের মর্যাদা দেয়ার তাওফিক দান করুন। রোজা পালনের মাধ্যমে এ মাসে অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।