ক্ষমা লাভে তাওবার যে ধাপগুলো অতিবাহিত করা জরুরি
অন্যায় অপরাধ করার পর তা থেকে অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসার নামই তাওবাহ। আল্লাহ তাআলাও বান্দার অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসায় খুশি হয়ে যান। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে না মহান আল্লাহ ওই বান্দার প্রতি রাগান্বিত হন বলে হাদিসে ঘোষণা করেছেন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
তবে সব মানুষের গোনাহ যেমন এক রকম হয় না তেমনি সব মানুষের তাওবাহও এক রকম হয় না। তবে মুমিনের অন্যতমগুণ হলো গোনাহ হোক কিংবা না হোক সব সময় তাওবাহ-ইসতেগফার করা। কেননা সব সময় তাওবাহ-ইসতেগফার করা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্যতম গুণ।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনের আগের ও পরের সব গোনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন মর্মে আল্লাহ তাআলা কুরআনে পাকে ঘোষণা করেছেন। তারপরও তিনি প্রতিদিন ৭০/১০০ বার তাওবাহ-ইসতেগফার করতেন। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি ঘোষণা করেছিলেন-
‘আমি কি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনকারী বান্দা হব না।’
সে কারণে উম্মতে মুহাম্মাদির মধ্যে সব মানুষ যেমন এক রকম নয়, সবার গোনাহ বা অন্যায়ের ধরণও এক রকম নয়, আবার সবার তাওবাহ ও ইসতেগফারের ধরণও এক রকম নয়। এ প্রসঙ্গে আল্লামা আলুসি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তাওবাকারীদের বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে তাওবার মর্মার্থ বা ব্যাখ্যায়ও রদবদল হয়ে থাকে। আর তাহলো এ রকম-
>> সাধারণ মানুষের তাওবা-
– অন্যায়ের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া;
– ভবিষ্যতে এমন অন্যায় না করার সংকল্প গ্রহণ করা;
– কারো প্রতি জুলুম অত্যাচার হয়ে থাকলে তার প্রতিকার তথা ক্ষতিপূরণ দেয়া;
– ক্ষতিপূরণ দেয়া সম্ভব না হলে অন্ততঃ ক্ষতিপূরণের নিয়ত বা সদিচ্ছা পোষণ করা।
>> বিশেষ ব্যক্তির তাওবা-
– যাবতীয় অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা;
– মন থেকে যাবতীয় কু-চিন্তা দূর করা;
– আমলের সব ত্রুটি-বিচ্যুতি বর্জন করা।
>> মর্যাদাবান ব্যক্তিদের তাওবা-
– তাঁদের অবস্থা তথা আমলের উন্নতি সাধনায় কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনে তাওবা করা;
– দুনিয়া ও পরকালে নিজেদের শান ও মাকাম তথা মান-মর্যাদার উন্নয়নে তাওবার মাধ্যমে চেষ্টা করা।
যেভাবে হজরত ইবরাহিম ও ইসমাঈল আলাইহিস সালাম বাইতুল্লাহ নির্মাণকালে আল্লাহর কাছে তাওবা করে বলেছিলেন-
‘হে আল্লাহ! আমাদেরকে তাওবা করার তাওফিক দান করুন এবং আমাদের তাওবা কবুল করুন। যা তাদের মর্যাদা বুলন্দের দোয়াও বটে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিজেদের আমলি জিন্দেগি ধাপে ধাপে উন্নত করার জন্য তাওবাহ-ইসতেগফারের এ ধাপগুলো একে একে অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। গোনাহমুক্ত জীবন গঠন করে দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।