শান রাজ্যে মিয়ানমারের সেনা বহরে তাং লিবারেশন আর্মির হামলা
শুক্রবার সকালের দিকে রাখাইন রাজ্যের সীমান্তরক্ষী পুলিশ বাহিনীর একটি আউটপোস্টে হামলা চালায় আরাকান আর্মি। এর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তাদের মিত্র তাং ন্যাশনাল লিবারেশান আর্মি (টিএনএলএ) উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে সামরিক বাহিনীর একটি কনভয়ে হামলা করেছে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাউ মিন তুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাউ মিন তুন দ্য ইরাবতীকে নিশ্চিত করেন যে, কুটকাই টাউনশিপে ইউনিয়ন হাইওয়ের কাছে নামকুট গ্রামের কাছে রিমোট নিয়ন্ত্রিত মাইনের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর কনভয়ে হামলা চালায় টিএনএলএ।
ব্রিগেডিয়ার-জেনারেল জাউ মিন তুন দ্য ইরাবতীকে বলেন, “কুটকাই ও নাম ফেত কা’র মাঝামাঝি এলাকায় টহল দেয়ার সময় নামকুট গ্রামের কাছে সামরিক বাহিনীর কনভয়ে রিমোট নিয়ন্ত্রিত মাইনের মাধ্যমে হামলা চালানো হয়। ট্রাকগুলোতে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে কোন আহত বা নিহতের ঘটনা ঘটেনি। ইউনিয়ন হাইওয়েতে তারা এই মাইন হামলা চালিয়েছে”।
শুক্রবার বিকালের দিকে টিএনএলএ তথ্য বিভাগ অনলাইনে সামরিক বাহিনীর ক্ষতিগ্রস্ত ট্রাক ও অস্ত্রপাতির ছবি দেয়, যেগুলো তারা সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে জব্দ করেছে বলে দাবি করেছে।
নামকুট গ্রামের স্থানীয় এক বাসিন্দা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ইরাবতীকে বলেন, “মনে হচ্ছে সামরিক বাহিনী যখন নেমে আসছিল, তখন তাদের উপর নজর রাখছিল টিএনএলএ যোদ্ধারা। আমরা ভারি ও হালকা অস্ত্রের গোলাগুলির শব্দ শুনেছি। আমরা জানিনা কেউ আঘাত পেয়েছে কি না। আমরা বাইরে যাওয়ার সাহসই করিনি”।
টিএনএলএ এবং মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মধ্যে লড়াই দেড় ঘন্টা স্থায়ী হয়েছিল বলে জানিয়েছেন টিএনএলএ তথ্য কর্মকর্তা মেজর মাই আইক কিয়াউ। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন।
মেজর মাই আইক কিয়াউ বলেছেন, “আমি শুনেছি যে, আমাদের সেনা যখন সড়ক পার হচ্ছিল, তখন তারা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মুখোমুখি হয়, যারা মিউজ থেকে নেমে আসছিল। এ সময় পরস্পরের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়েছে। আমি এখনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানি না”।
স্থানীয় এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, লড়াইটা হয়েছে হাইওয়েতে, যেটা মিয়ানমার আর চীনের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুটের অংশ। সড়কে ওই সময় যে সব যাত্রীবাহী ও কার্গো যানবাহন ছিল, লড়াই চলাকালে সেগুলো নামকুট গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিল।
আরাকান আর্মি, টিএনএলএ এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি – যারা সম্মিলিতভাবে ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামে পরিচিত, তারা ৩ মে একতরফা অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করে। তবে, পরদিন এক যুক্ত বিবৃতিতে তারা জানায় যে, দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক ঘটনাপ্রবাহ বিবেচনা করে তারা প্রয়োজনে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।