শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফ ও অনলাইন পদ্ধতি বাতিলের দাবি
করোনাভাইরাস সংক্রমণে ‘লকডাউনে’ সারাদেশে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফ এবং অনলাইন ভিত্তিক ক্লাস-ভর্তি পরীক্ষা স্থগিতের দাবি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের সংগঠনের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন এই দাবি জানান। তিনি বলেন, প্রায় দুই মাসের অধিক সময় ধরে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। এই সময়ে শিক্ষর্থীদের বেতন দেয়া তাদের অভিভাককদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতি সদয় হয়ে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফ করে দিলে তা হবে মানবতার জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি এই মুহুর্তে অনলাইন ভিত্তিক ক্লাস, ভর্তি পরীক্ষা ও ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত করতে হবে। একইসাথে আমরা করোনা মহামারীর বর্তমান পরিস্থতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে নিজ নিজ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন। তিনি বলেন, ছাত্রদল সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে সংগ্রাম করে আসছে। লকডাউনের কারণে স্থবির হয়ে আছে অর্থনীতি। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের বেতন দেয়া তাদের অভিভাবকদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইনে ভর্তি, ক্লাস, পরীক্ষা অব্যাহত আছে। আপনারা জানেন অনেক জায়গায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত নেই। মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিক মতো থাকে না। অনেক গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। এই অবস্থায় তাদের প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা চালানো অসম্ভব। আমরা মনে করি, এমতাবস্থায় অনলাইনে শিক্ষা কার্য্ক্রম অব্যাহত রাখা ব্যবসায়িক মনোভাবেরই বহির্প্রকাশ। তাছাড়া অনেক শিক্ষার্থী টিউশনি করে শিক্ষা ব্যয় নির্বাহ করে সেটাও করোনা মহামারীর কারণে সম্ভভ হচ্ছে না। ইন্টারনেটের উচ্চ মূল্য, মূল্যবান ডিভাইস কেনাও অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে অসম্ভব। এরওপর অনেক স্থানে নিয়মিত বিদ্যুত সরবারহ না থাকার কারণে অনলাইন ভিত্তিক পড়াশুনা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সময়ে রাজশাহীর তানোরের আবদুল মালেক, মৌলভীবাজারের ফতেহপুরের শাহ আলম, গাইবান্ধার ইমতিয়াজ আহমেদ রনি, লারমনিরহাটের আদিতমারীর আমিনুল ইসলাম রিপনকে গ্রেপ্তার এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওমর ফারুক, পিরোজপুর সালাউদ্দিন কুমার, আলী আহমেদ তুষার, সিলেটের জহিরুল ইসলাম আলাল, ফেনীর নিলয় হাসান রবিনের ওপরের ক্ষমতাসীন দলের হামলার নিন্দা জানান ইকবাল হোসেন শ্যামল।
ছাত্রদল মানবতার সেবায় যেসব কাজকর্ম করছে তাদের বাঁধা দেয়া হচ্ছে। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে হাত ধোঁয়ার জন্য বেসিন বসাতে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি আমরা যখন জনগণের জন্য এই মানবিক কাজগুলো করছি তখন আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, তাদের গ্রেপ্তার এবং হামলা ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে মাস্ক, স্যানিটাইজার, সুবিধবঞ্চিত মানুষের বাড়ি বাড়ি ত্রাণ সামাগ্রী পৌঁছিয়ে দেয়া, নগদ সহায়তা প্রদান, রাস্তা-ঘাট পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, জীবানুনাশক স্প্রে ছিটানো, কর্মহীন ক্ষুদ্র চাষী ও দিন আনে দিন খায় মানুজনদের সহায়তা প্রদান, ইফতার-সেহেরি বিতরণের বিভিন্ন কার্য্ক্রম তুলে ধরে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ছাত্রদল সারাদেশে যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেগুলো আপডেট নিয়মিত ফেসবুক পেইজে ‘মানবাতার সেবায় ছাত্রদল (url-www.facebook.com/socialjcd/)’ দেয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান শরীফ, সাংগঠনিক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।