আপনার পাসওয়ার্ড কি সঙ্গীর সঙ্গে শেয়ার করা উচিত?
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যত স্বচ্ছ হবে, সম্পর্কে সৌন্দর্য ততই বাড়বে। কিন্তু সেই স্বচ্ছতার মাপকাঠি আসলে কী? এমন অনেক দম্পতি আছে যারা পরস্পরের ইমেল, সোশাল মিডিয়া এমনকী, ফোনের পাসওয়ার্ডও জানেন। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে অন্তত ৭০ শতাংশ স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের পিন নাম্বার, পাসওয়ার্ড তো জানেনই, এমনকী তারা ফিঙ্গারপ্রিন্টও অদলবদল করেন। সমীক্ষায় এও দেখা গেছে, এই পাসওয়ার্ড বা পিন জানিয়ে দেওয়া নিয়ে দম্পতিদের তেমন কোনো আপত্তিও অনেক সময় থাকে না।
স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকার এই পাসওয়ার্ড শেয়ার করাটাই কি পারস্পরিক বিশ্বাসের পরীক্ষা? নাকি এটি পরস্পরের প্রতি দখলদারিত্বের রূপ? নিজের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো অপর একজন মানুষের কাছে কতটা খুলে দেয়া উচিত?
সঙ্গীর সঙ্গে ওয়াইফাই বা নেটফ্লিক্সের পাসওয়ার্ড শেয়ার করতেই পারেন। তবে ফোনের পাসকোড দেয়ার আগে আপনাকে একশোবার ভাবতে হবে। কারণ সম্পর্কে সেই স্বচ্ছতা রাতারাতি আসে না, এবং সেই বিশ্বাস গড়ে উঠতেও বহুবছর সময় লাগে। সেই সময়টা দিতে হবে, এবং তারপরেও সচেতন থাকা দরকার।
সম্পর্ক কি নতুন? তাহলে পাসওয়ার্ড শেয়ার না করাই ভালো। সদ্য প্রেমে পড়ে থাকলে আবেগে ভেসে গিয়ে নিজের যাবতীয় গোপন তথ্য দিতে যাবেন না। কারণ এই সম্পর্ক কতদিন টিকবে আপনি জানেন না, এবং কোনো কারণে সম্পর্ক ভেঙে গেলে আপনার পাসওয়ার্ডগুলোও কিন্তু বেহাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সঙ্গীর সঙ্গে আপনার ঘনিষ্ঠতা যতই গাঢ় হোক না কেন, মনে রাখবেন পাসওয়ার্ড জানিয়ে দেয়া মানেই কিন্তু আইডেন্টিটি চুরির জায়গাটাও খুলে দেয়া। আপনার নাম-পরিচয়-অ্যাকাউন্ট থেকে এমন অনেক কিছু পোস্ট হতে পারে যার সঙ্গে আপনি আদৌ একমত নন। আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পিন ব্যবহার করে টাকা তুলে নেয়া হবে না, সে ব্যাপারেও কি গ্যারান্টি দিতে পারেন?
দীর্ঘদিনের সম্পর্কেও পাসওয়ার্ড শেয়ার করা যায় কিনা, তা নির্ভর করে ওই দম্পতির পারস্পরিক রসায়নের উপর। দশ বছর একসঙ্গে থাকলেও সেই রসয়ানটা নাও থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড শেয়ারের প্রশ্নই ওঠে না!
আপনি হয়তো নিজের পাসওয়ার্ড দিতে রাজি, কিন্তু আপনার সঙ্গী স্বচ্ছন্দ নন। এমনটা হওয়া খুব স্বাভাবিক এবং সে ক্ষেত্রে এই পাসওয়ার্ড না দেয়াকে ঘিরে আপনাদের মধ্যে যদি ঝগড়াঝাঁটি, মন কষাকষি তৈরি হয়, তা হলে কিন্তু খুব বড় সমস্যা তৈরি হতে পারে। পাসওয়ার্ড দেয়া-নেয়ার চেয়ে সম্পর্কে সুস্থতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। অনলাইন প্রাইভেসির ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখুন।