ইন্টারনেট নয়, সঙ্গী হোক বাস্তবতা
অফিসের কাজে কম্পিউটার খুলে তো বসতে হয়ই, এর বাইরে? অবসরের সময়টুকুও তো সেই কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, ট্যাব কিংবা টিভির পর্দায় কাটে। সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েব সিরিজ, ইউটিউব, বন্ধুদের সঙ্গে ভিডিও চ্যাট- সময় কাটানোর হাজারটা উপায় ছড়িয়ে আছে ইন্টারনেটে। তাইতো সকালে ঘুম ভেঙেই মোবাইল ফোন ঘাঁটা শুরু আবার ঘুমিয়ে পড়ার আগ পর্যন্তও তাই। এমনটাই রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকের।
কিন্তু এভাবে একটানা চলতে থাকলে তার খুব খারাপ প্রভাব পড়তে পারে আপনার মস্তিষ্কের উপর। একাধিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ইন্টারনেট অ্যাডিকশনের ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়, স্ট্রেস আর উৎকণ্ঠার পরিমাণও বাড়ে, যা পরে স্থায়ীভাবে ডিপ্রেশনের রূপ নিতে পারে। এছাড়া একটানা অনেকক্ষণ কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে হরমোনের মাত্রায়ও তারতম্য আসতে পারে। সোশাল মিডিয়ায় যথেষ্ট পরিমাণ ‘লাইক’ না পেলেও মানসিক সমস্যা শুরু হয়ে যায় অনেকের। তাই ইন্টারনেট নয়, বাঁচুন বাস্তবতায়-
পড়ার অভ্যাস করুন: যেহেতু বাইরে বের হওয়ার ঝামেলা নেই, তাই সব কাজ করেও আপনার হাতে বেশ অনেকটাই সময় বাঁচার কথা। এই সময়টা ইন্টারনেটে চোখ না রেখে বরং বইয়ের পাতায় ফিরুন। যে বইটা দীর্ঘদিন ধরে পড়ার ইচ্ছে ছিল অথচ হয়ে ওঠেনি, সেখান থেকেই শুরু করুন। অথবা কোনো প্রিয় বই নতুন করে পড়তে শুরু করতে পারেন।
ইন্টারনেটে থাকার সময় নির্দিষ্ট করুন: সোশ্যাল মিডিয়াই হোক বা ওয়েব সিরিজ, সারাদিনে তার জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে নিন। এর বাইরে পারতপক্ষে ইন্টারনেটে না ঢোকারই চেষ্টা করুন। একান্ত ঢুকতে হলেও দ্রুত বের হয়ে আসুন।
স্ট্রেস দূর করুন: এই সময়ে আপনি সোশ্যাল মিডিয়া বা ইন্টারনেটে বেশি সময় কাটাচ্ছেন মানেই নানান ধরনের খবর আপনার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। সারাক্ষণ এ সব খবর মনের উপর একটা চাপ তৈরি করে। ইন্টারনেটে সময় কাটানো কমালে খবরের পরিমাণও কমবে, মন চাপমুক্ত থাকবে। অহেতুক মনের উপর চাপ তৈরি না করে বরং নিজের ও আপনজনদের সুস্থতার দিকে মন দিন।
প্রকৃতির সঙ্গে: প্রতিদিন বিকেলে বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় খানিকক্ষণ সময় কাটান। আকাশ দেখুন, গাছের পাতার রং দেখুন, রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকুন। সঙ্গে থাকুক ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ। মন অনেক হালকা লাগবে।
ভালো ঘুম: মনকে শান্ত রাখতে ভালো ঘুম জরুরি। নিয়মিত সাত-আট ঘণ্টার নিরুপদ্রব ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। হালকা খাবার খান, প্রচুর পানি পান করুন, নিশ্চিন্তে ঘুমান। লকডাউন শেষে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে থাকবেন সুস্থ।