মজুরি না দিয়ে শ্রমিক সরদারকে পেটালেন ইটভাটার মালিক
নওগাঁর ধামইরহাটে মালিকের কাছে পাওনা টাকা চাওয়ায় শ্রী জহরলাল (৪৮) নামে এক শ্রমিককে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জহরলাল বাদী হয়ে রোববার রাতে পাঁচজনকে আসামিকে করে ধামইরহাট থানায় মামলা করেছেন। মামলার পর ইটভাটার ম্যানেজার বাবুল হোসেনকে (৪৫) আটক করেছে পুলিশ।
তিনি জেলার পত্নীতলা উপজেলার কেশবপুর গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে। আর ভুক্তভোগী জহরলাল ধামইরহাট উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের বড়শিবপুর (কাজিপাড়া) এলাকার শ্রী রবিয়া সিং এর ছেলে। গত শনিবার (২১ মার্চ) বিকেলে পত্নীতলা উপজেলার পাটিচড়া ইউনিয়নের একটি ইটভাটায় এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পত্নীতলা উপজেলার পাটিচড়া ইউনিয়নের একটি ইটভাটায় শ্রমিকের সরদার হিসেবে কাজ করতেন শ্রী জহরলাল। তিনি ওই ইটভাটার মালিক মৃত বিজয় চৌধুরীর ছেলে সুজন চৌধুরীর (৫৫) কাছ থেকে মজুরি ও খোরাকি বাবদ প্রায় এক লাখ ৫ হাজার টাকা পেতেন। আর এ পাওনা টাকার জন্য তিনি মালিককে কয়েক সপ্তাহ ধরে তাগাদা দিয়ে আসছিলেন। মালিকের কাছ থেকে পাওনা টাকা না পাওয়ায় বাকি শ্রমিকরা ভাটার কাজ ফেলে চলে যায়। আর শ্রমিক চলে যাওয়ায় ভাটার মালিক সুজন চৌধুরী এক পর্যায়ে জহরলালের ওপর চড়াও হন।
গত শনিবার দুপুরের প্রায় ১০/১২টি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে মঙ্গলবাড়ি বাজার থেকে জহরলালকে তুলে নিয়ে যায় ইটভাটার মালিক পক্ষের লোকজন। পরে জহরলালকে ইটভাটায় নিয়ে গিয়ে মালিক সুজন চৌধুরীর নেতৃত্বে ভাটার ম্যানেজার বাবুল হোসেন ও শাহীন আহমেদসহ আরও কয়েজন মিলে তাকে ভাটার আগুনে ফেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। এসময় তাকে লাঠি, রড দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে জোরপূর্বক সাদা স্টাম্পে স্বাক্ষর করে নেয়া হয়।
বিষয়টি জহরলালের পরিবার জানতে পেরে পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে ধামইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন শ্রী জহরলাল।
ঘটনার পর জহরলাল বাদী হয়ে ভাটার মালিকসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করলে পুলিশ রাতেই ইটভাটার ম্যানেজার বাবুল হোসেনকে আটক করে।
এ ব্যাপারে ইটভাটার মালিক সুজন চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ধামইরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হাসান সরদার বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার পর একজনকে আটক করে সোমবার সকালে জেলহাজতে পাঠাতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে।