হাসিনাকে প্রত্যর্পণে ভারতকে দেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় দলিলাদি
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনে প্রয়োজনীয় দলিলাদি ও তথ্য ভারত সরকারকে পাঠানো হয়েছে। শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে তাগিদ দেয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাগিদ দেয়া হবে। এ ছাড়া শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে রেড নোটিশ জারি করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান। জাতিসঙ্ঘে তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, প্রতিবেদনটি যেকোনো মানুষের বিবেককে নাড়া দেবে। প্রতিবেশী ভারতও বিষয়টি আমলে নিয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বলে আমরা আশা করি।
মুখপাত্রকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের দু’টি পাঠ্যপুস্তকের তথ্য ও সার্ভে বিভাগের ওয়েবসাইটে দেয়া এশিয়ার মানচিত্র নিয়ে চীন আপত্তি জানিয়েছে। এতে অরুনাচল প্রদেশ ও আকসাই চীনকে ভারতের অংশ হিসাবে দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া উভয় পাঠ্যপুস্তক ও ওয়েবসাইটে চীন ও হংকংকে আলাদা রাষ্ট্র হিসাবে দেখানো হয়েছে, যদিও হংকং চীনের অংশ। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া কী?
জবাবে রফিকুল আলম বলেন, ঢাকায় চীনের দূতাবাস গত ২৮ নভেম্বর এক কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে ব্যবহৃত মানচিত্র, তথ্যের অসঙ্গতি এবং সার্ভে অব বাংলাদেশে উল্লিখিত একটি সীমারেখা সম্পর্কে আপত্তি জানিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে। এ বিষয়ের অগ্রগতির ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।
মুখপাত্র জানান, আগামী ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ওমানের মাসকাটে অষ্টম ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে যোগ দেয়ার জন্য ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এবারের সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে সামুদ্রিক অংশীদারিত্ব, গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বরকে আরো জোরদার করা, সামুদ্রিক অর্থনৈতিক স্বার্থ সুরক্ষা, সামুদ্রিক সরবরাহ চেইন শক্তিশালী করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। সামুদ্রিক সরবরাহ চেইন শক্তিশালী করা সংক্রান্ত প্লেনারিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। তিনি বলেন, এই সফরে ওমান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সম্মেলনের সাইডলাইনে ভারতসহ অন্যান্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সাক্ষাৎ ও দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সাথে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এ অঞ্চলের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার পথ সুগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।