ভারতের ‘আগ্রাসন ও অপপ্রচারের’ প্রতিবাদে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাদের বিক্ষোভ, ৬ দাবি
ভারতের বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতা ও অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি।
সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত আছে।
পাশাপাশি ভারত সরকার বাংলাদেশে গণতন্ত্র হত্যা ও মাফিয়া রাজত্ব প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করে আসছে। ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে ভিত্তিহীন নেতিবাচক অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত আক্রমণের কাল্পনিক কাহিনি প্রচার করছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি আয়োজিত প্রতিবাদ মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত সাবেশে এসব বলা হয়।
এর আগে রাজারবাগ থেকে শান্তিনগর ও কাকরাইল দিয়ে সেগুনবাগিচা হয়ে প্রতিবাদ মিছিলটি প্রেসক্লাবের সামনে আসে।
প্রতিবাদ মিছিলে বক্তারা বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা ভারতের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নাশকতামূলক কাজ করার ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছেন। সেই দেশে বসে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আপত্তিকর ও দেশদ্রোহিতামূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি যাতে এ ধরনের বক্তব্য রাখতে না পারেন, সে সংক্রান্ত বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ ভারত সরকার অগ্রাহ্য করছে।
বক্তারা আরও বলেন, কলকাতা এবং ত্রিপুরায় বাংলাদেশের উপ- ও সহকারী হাই কমিশনের নিরাপত্তা দিতে ভারত সরকার ব্যর্থ হয়েছে। সেখানে আমাদের প্রিয় জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছে, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলি দাহ করা হয়েছে, যাতে জাতি হিসেবে আমরা বাংলাদেশিরা মর্মাহত হয়েছি।
বক্তারা বলেন, ভারত বৈরিতামূলক বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভিসা প্রদান বন্ধ রেখেছে। অন্যদিকে, ভারতীয় অনেক হাসপাতাল বাংলাদেশিদের জন্য চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। মনে রাখা প্রয়োজন এসব ভারতীয় কুপ্রতিবেশিতা আমাদের চেয়ে ভারতের ক্ষতি করছে বেশি।
বক্তারা বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজনে আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে আমরা এমন এক বাহিনীর উত্তরসূরি যারা রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে সর্বপ্রথম পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। আবারো প্রয়োজন হলে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব।
এসময় বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে ৬ দাবি জানানো হয় –
১) অবিলম্বে বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতা ও অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে।
২) ভারতে বাংলাদেশ হাই কমিশন, উপ হাই কমিশনসহ সকল বাংলাদেশি স্থাপনার সুষ্ঠু নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে।
৩) শেখ হাসিনার সকল অপ-তৎপরতা বন্ধ করুন এবং চাহিবামাত্র তাকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ফিরিয়ে দিন।
৪) সীমান্তে হত্যা বন্ধ করুন।
৫) হাসিনা-মোদির গোপন চুক্তি থাকলে তা প্রকাশ করার আহ্বান জানাচ্ছি। ট্রানজিট, বিদ্যুৎসহ সকল বৈষম্যমূলক চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানাচ্ছি।
৬) বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি। এখন সময় এসেছে স্বাস্থ্য সেবায় আত্মনির্ভরশীল হওয়ার। সরকার এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়নে বিনিয়োগ করুন, দেশে বিশ্বমানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলুন।