রিটার্নিং কর্মকর্তার গেজেট আইন সম্মত নয়
ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক প্রকাশিত গেজেট বিধিবিধান বহির্ভূত দাবি করে তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছেন ঢাকা উত্তরে বিএনপি’র হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া তাবিথ আউয়াল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদনটি করেন তিনি।
আবেদনপত্রে তাবিথ আওয়াল উল্লেখ করেন, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ এর ৩৬ ধারা এবং স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর ৪৩ বিধি অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থীর নাম “নির্বাচন কমিশন” কর্তৃক বা ‘নির্বাচন কমিশনের আদেশক্রমে’ গেজেট প্রকাশ করারই বিধান রয়েছে। কিন্তু ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তথাকথিত নির্বাচিত ঘোষিত প্রার্থীদের তালিকা ‘নির্বাচন কমিশন’ প্রকাশ না করে বা নির্বাচন কমিশনের আদেশক্রমে প্রকাশিত না হয়ে ২রা ফেব্রুয়ারি রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক তার নামেই প্রকাশিত হয়েছে, যা আইন সম্মত নয়।
তিনি বলেন, অধিকন্তু প্রত্যেক ভোট কেন্দ্র হতে প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক প্রেরিত ফলাফল বিধিমালার ৪১ বিধি অনুযায়ী একত্রীকরণ করতে হয়। এর জন্য তারিখ, সময়, ও স্থান উল্লেখ পূর্বক প্রত্যেক প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ও তাদের নির্বাচনী এজেন্টদের উপস্থিত থাকার লিখিত নোটিশ ও তাদের সামনে ফলাফল একত্রীকরণ করার কথা। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার আমাকে ও আমার নির্বাচনী এজেন্টকে এ বিষয়ে কোন কিছুই অবহিত করেননি। তাছাড়া ৪১ বিধি অনুযায়ী অন্যান্য বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হয়নি।
তাবিথ দাবি করেন, ভোটের দিন সন্ধা ৬ টার মধ্যে সকল ভোট কেন্দ্র হতে ফলাফল প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশন হতে ২৯শে জানুয়ারি জারিকৃত বিশেষ পরিপত্র অনুযায়ী কমিশনের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও রিটার্নিং অফিসার তা পরিপালন না করে ২রা ফেব্রুয়ারি বেসরকারি প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করেন। বেসকারি ফলাফল ঘোষণার পর কোন প্রক্রিয়া রিটার্নি অফিসার কতৃক একই সময়ে গেজেট প্রকাশনার ‘ড’ ফরম প্রকাশ করা হলো তা বোধগম্য নয়। রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক বিদ্যুৎগতিতে ‘ড’ ফরম প্রস্তুত করার ফলে প্রতিয়মান হয় যে, নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং অফিসার পূর্বেই ‘ড’ ফরম প্রস্তুত করে রেখেছিলেন, যা সম্পূর্ন নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
তিনি বলেন, একজন প্রতিদ্বন্দ্বি মেয়র প্রার্থী হিসাবে একীভূত ভোট গণনার বিবরণীর সত্যায়িত কপি পাওয়া আমার আইনগত অধিকার।
এ অধিকারে আমি বিগত ৬ই ফেব্রুয়ারি ভোট গণনার কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল বিবরনী পাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু অদ্যাবধি তা আমাকে দেয়া হয়নি।
এবিষয়ে তাবিথ আউয়াল বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ম বহির্ভূত ভাবে গেজেট প্রকাশ করেছে এটা তারা কিছুতেই পারে না। বর্তমান নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ, যারা আওয়ামী লীগ করে তাদের চেয়ে তারা (নির্বাচন কমিশন) বেশি দলীয় ভুমিকা পালন করছে। সব ভোট কেন্দ্রে ১৩ শতাংশ ভোট ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে বাড়ানো হয়েছে। আমি আমার প্রাপ্ত ফলাফল ও ব্যালট ইউনিটের লগ পেপার, এবং ভোট শুরু হওয়ার আগে কন্ট্রোল ইউনিট থেকে যে প্রিন্ট কপি বের হয় তার কপি চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছি, কিন্তা তারা নিরব ভুমিকা পালন করছে, তারা আমাকে না দিলে আমি বির্নাচন ট্রাইবুন্যালে যাবো, সেখানেও কাজ না হলে আমি হাইকোর্টে যাবো। আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো কারণ একজন প্রার্থী হিসাবে ফলাফলের কপি পাওয়া আমার অধিকার।
রিটার্নিং কর্মকর্তা গেজেট প্রকাশ করতে পারে কিনা জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার জানামতে রিটার্নিং কর্মকর্তা তার নামে গেজেট প্রকাশ করতে পারে। অতীতে অনেক নির্বাচনেই এরকম হয়েছে। তবে আইনগত ভাবে পারে কিনা এবিষয়ে আমার জানা নেই। আমি আইনের বিষয়টি না দেখে বলতে পারবো না। কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) শাহাদত হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, আইনের ব্যাখ্যা দেখে বলতে হবে।