বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ স্কুলছাত্র রাতুলকে বাঁচানো গেল না
বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত স্কুলছাত্র জুনায়েদ ইসলাম রাতুল (১৩) মারা গেছে। ৫০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল সোমবার ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
রাতুল বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জ ঘোনপাড়া এলাকার মুদি দোকানি জিয়াউর রহমানের ছোট ছেলে এবং পথ পাবলিক স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। তার অনার্সপড়ুয়া এক বোন রয়েছে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে মা-বাবার কান্না থামছে না।
বাবা জিয়াউর রহমান জানান, গত ৫ আগস্ট সকাল থেকে শহরের বড়গোলা এলাকায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে যোগ দেয় রাতুল। সরকার পতনের খবরে বিকেলে বিজয় মিছিল বের হয়। সাড়ে ৪টার দিকে মিছিল যখন বগুড়া সদর থানার দিকে যাচ্ছিল, তখন পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। সেখানে রাতুলের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। তাকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে সহপাঠীরা। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরে রাতুলকে ঢাকার নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে এক মাস ২০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল ভোরে তার মৃত্যু হয়।
জিয়াউর রহমান বলেন, ‘শরীরে পুলিশের ছোড়া শতাধিক গুলি নিয়ে আমার ছেলে হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় ছটফট করেছে। শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি।’
তিনি জানান, হাসপাতাল থেকে গতকাল দুপুরে জানাজার জন্য রাতুলের মরদেহ রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে নেওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে নেওয়া হয় বগুড়া শহরের হাকির মোড় এলাকার বাসায়। এরপর দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে।
পথ পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরনবী সুজা বলেন, রাতুলের মৃত্যুর খবরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করি। রাতুল দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। সে একজন যোদ্ধা।