নির্বাচনী সংস্কার অপরিহার্য : ইসি মাহবুব
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ‘অস্বাভাবিক কম ভোট পড়াকে স্বাভাবিক বলেই’ মনে করছেন আলোচিত নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার। গতকাল মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত ১ ফেব্রুয়ারির ঢাকা সিটির নির্বাচনে উত্তরে ভোট পড়েছে ২৫ দশমিক ৩০ শতাংশ ও দক্ষিণে ২৯ দশমিক ০২ শতাংশ। গড়ে দুই সিটিতে ভোট পড়েছে ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ। ক্ষমতাসীন দলের দুই মেয়র প্রার্থী মাত্র ১৫-১৭ শতাংশ জনসমর্থন মেয়র হয়েছেন। বিএনপি নির্বাচনের এ ফল প্রত্যাখ্যান করে হরতালও করেছে।
নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা ও নির্বাচনোত্তর অবস্থার অভিমত জানাতে গিয়ে লিখিত বক্তব্যে ইসি মাহবুব বলেন, ‘অস্বাভাবিক কম ভোট পড়া স্বাভাবিক। এটা গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত হতে পারে, কিন্তু এটাই বাস্তবচিত্র।’ তিনি বলেন, ‘জনগণ নির্বাচন বা ভোটের প্রতি নিরাসক্ত হলে নানা প্রকার ব্যাখ্যা বা অপব্যাখ্যা দিয়ে এ বাস্তব অবস্থার চিত্রটি খণ্ডন করা যাবে না।’ ‘বাংলাদেশে নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কী’ এ প্রশ্ন রেখে ইসি মাহবুব বলেন, ‘এ প্রশ্নের সামনে আমাদের দাঁড় করিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনবিমুখতা গণতন্ত্রহীনতার নামান্তর। এই নির্বাচনে ভোটের প্রতি জনগণের অনীহা দেখে মনে প্রশ্ন জাগে, জাতি কি ক্রমান্বয়ে গণতন্ত্রহীনতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে বিরোধীপক্ষের দৃশ্যমান অনুপস্থিতি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তাই নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।’ মাহবুব তালুকদার আরও বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত যেভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, তাতে আচরণবিধি রাখা না রাখা সমান। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো যাচাইয়ের কোনো লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়নি। আচরণবিধি না মানা এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা গৃহীত না হওয়া ফ্রি স্টাইল নির্বাচনের মূল উপাদান।’ তিনি বলেন, ‘দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সব রাজনৈতিক দল আলোচনার টেবিলেই নির্বাচন ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে। তা না হলে অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে পা বাড়াবে বাংলাদেশ।’ ইসি মাহবুব বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থা ব্যর্থ হলে ক্ষমতা হস্তান্তরের স্বাভাবিক পথ রুদ্ধ হয়ে যায়, সেই অবস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’