রমজানের পর শাওয়ালের ৬ রোজা

ঈদের আমেজ এখনো কাটেনি। রোজাদারদের মধ্যে অনেকেই বছরব্যাপী রোজার ফজিলত পাওয়ার লক্ষ্যে ঈদের মাসে (শাওয়ালের) ৬ রোজা রাখা শুরু করেছেন। কেননা নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার বিশেষ সুসংবাদ দিয়েছেন। কল্যাণ ও সওয়াবের ঘোষণা দিয়েছেন। কী সেই ঘোষণা?

ঈদের মাসে মুমিন মুসলমান আনন্দঘন পরিবেশে উৎসব, মিলনমেলা উদযাপন করে থাকেন। এ মাসটিই ৬ রোজার (শাওয়াল) মাস। হ্যাঁ, বছরজুড়ে রোজার সওয়াব পেতে শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা পালন করেন মুমিন মুসলমান। কিন্তু বছরজুড়ে এ সাওয়াব পেতে হলে একটি শর্ত মানতে হয়। তাহলো অবশ্যই আগে রমজানের রোজাগুলো রাখত হবে। তবে শাওয়াল মসের ৬ রোজা একটানা না রাখলেও ক্ষতি নেই। মাসজুড়ে একটা একটা করে থেমে থেমে থাকা যায়।

ঈদের মাস শাওয়ালে ৬ রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত ও মর্যাদা ঘোষণা করেছেন ও সুসংবাদ দিয়েছেন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হদিসে এসেছে-

হজরত আবু আইয়ুব আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা রাখলো এবং শাওয়াল মাসে ৬টি রোজা রাখলো, এটি (শাওয়ালের ৬ রোজা) তার জন্য সারা বছর রোজা রাখার সমতুল্য।’ (মুসলিম)

আল্লাহর ভয়ের গুণ অর্জন করা নেককার মুমিন মুসলমান ঈদ পালনের পর বছর জুড়ে রোজার সাওয়াব পাওয়ার আশায় শাওয়ালের ৬ রোজা পালন করে থাকেন। এ রোজার রয়েছে আরও ফজিলত এবং প্রয়োজনীয়তা। তাহলো-

১. ঈদের মাসের ৬ রোজাকে গুরুত্বকে এভাবে তুলনা করা হয়েছে যে, ৬ রোজা হলেঅ ফরজ নামাজের পর সুন্নাতে মুআক্কাদার মতো।

সুন্নাতে মুয়াক্কাদা যখন ফরজ নামাজের উপকারিতা ও তার অসম্পূর্ণতাকে পরিপূর্ণ করে। ঠিক ঈদের মাস শাওয়ালের ৬ রোজাও রমজানের ফরজ রোজার অসম্পূর্ণতাকে সম্পূর্ণ করে এবং রমজানের রোজায় কোনো ত্রুটি ঘটে থাকলে তা দূর করে থাকে। সে অসম্পূর্ণতা ও ত্রুটি কথা রোজাদারের জানা থাকুক আর না থাকুক।

২. রমজানের ফরজ রোজা পালনের পর, ঈদের মাসে পুনরায় রোজা পালনের মানে হলো- রমজানের রোজা কবুল হওয়ার একটি লক্ষণ। যেহেতু মহান আল্লাহ তাআলা যখন কোনো বান্দার নেক আমল কবুল করেন, তখন তার পরেই তাকে আরও নেক আমল করার তাওফিক দান করে থাকেন। যেমন ওলামায়ে কেরামগণ বলে থাকেন, ‘নেক কাজের পর এ নেক কাজ অব্যাহত রাখা বা চালু রাখাও নেক কাজ।

তাই নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ‘ঈদুল ফিতরের পরের ৬ দিন ধারাবাহিকভাবে রোজা রাখা উত্তম। যদি কেউ বিরতি দিয়ে রোজা রাখে বা মাসের শেষ দিকে রাখে, তাহলেও হাদিসে ঘোষিত ‘রমজানের পরে’ রোজা রাখার ফজিলত পাওয়া যাবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজান পরবর্তী সাওয়াল মাসের ৬ রোজা রাখার তাওফিক দান করুন। এ রোজা পালনের মাধ্যমে ঘোষিত ফজিলত অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

Comments (০)
Add Comment