ধর্ষণের শিকার ছাত্রী, প্রতিবাদে রাতেই উত্তাল ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে ও জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা।
রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশ শেষে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, ‘অতীতে বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধে অভিযুক্তদের লঘু শাস্তির ফলে বর্তমানে দেশে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অতীতে দেখা গেছে অপরাধীরা ধর্ষণ করে সরকারি দলের ছত্রছায়ার নিচে এসে পার পেয়ে গেছে। যা একটা সমাজে অপরাধ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। সরকারের কাছে অনুরোধ এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে।’
এ সময় সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন বলেন, ‘আমাদের দেশে কোনো ঘটনার পরই তথ্য-প্রমাণ গায়েব হওয়ার নজির রয়েছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ এই ঘটনার তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহপূর্বক দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।’
এ সময় আজ সোমবার বেলা ১১টায় সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন ডাকসুনেতা আখতার হোসেন। এতে দলমত নির্বিশেষে সব শিক্ষার্থীকে অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বান্ধবীর বাড়ি যাওয়ার পথে গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে  রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতেলে চিকিৎসাধীন আছেন। ওই ছাত্রীকে দেখতে গতকাল রাতে হাসপাতালে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান, প্রক্টর ড. একেএম গোলাম রব্বানীসহ কয়েকজন শিক্ষক।
ওই ছাত্রীর সহপাঠীরা জানান, তিনি ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং রোকেয়া হলে থাকেন। গতকাল ক্লাস শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চড়ে শ্যাওড়ায় এক বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন ওই শিক্ষার্থী। ভুল করে এর আগের বাসস্টপ কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে নেমে পড়েন তিনি। ওই সময় ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার একপর্যায়ে হঠাৎ করে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি পেছন থেকে তার মুখ চেপে ধরে। এরপর তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করে। পরে তাকে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। ওই ছাত্রীকে শারীরিকভাবেও নির্যাতন করা হয় বলেও জানান তারা।
পরে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী নিজেই শ্যাওড়ায় তার বান্ধবীর বাসায় চলে যান। সেখান থেকে আরো সহপাঠীদের জানানোর পর তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল খান জানান, ঢাবি ছাত্রীকে রাতেই হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।

Comments (০)
Add Comment