আ’লীগকে কলুষমুক্ত করে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে

শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশে আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের শক্তিকে ক্ষমতায় এনেছেন। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যা এবং একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করেছেন। আসুন আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাই। আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করে, কলুষমুক্ত করে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করি। তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলি।

জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে শহীদ এম মনসুর আলী স্মৃতি সংসদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মুঞ্জু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া প্রমুখ।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে দল সংঘবদ্ধ করেছেন। অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশে আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের শক্তিকে ফিরিয়ে এনেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা কায়েম করছেন। আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলা হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাঙালি জাতি আজ পৃথিবীর বুকে আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে। এরমধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যতম রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছেন।

তিনি বলেন, কিন্তু এখনও ষড়যন্ত্র চলছে। যারা সেদিন মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধের শক্তি ছিল তাদের ষড়যন্ত্র ছিল, আছে এবং আগামীতেও থাকবে। এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেই শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হবে ইনশাআল্লাহ এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে প্রকৃত অর্থে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার প্রতিশোধ নেয়া হবে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, দেশ ও জাতি আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।

তিনি বলেন- লন্ডনে সাংবাদিকরা বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন, ‘আপনার দেশ তো ধ্বংসস্তূপ, আপনি কোথায় যাবেন।’ বঙ্গবন্ধু উত্তরে বলেছিলেন, ‘কেন, আমি আমার স্বপ্নের স্বাধীন সোনার বাংলায় ফিরে যাবে।’ ধ্বংসস্তূপ থেকেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ৩ বছর ৭ মাস পরে তাকে হত্যা করা হল। এরপর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হল।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, তারা শেখ রাসেলকেও হত্যা করেছিল কারণ বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ যেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসতে না পারে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা দেশের বাইরে থাকার কারণে তারা বেঁচে গিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন। চার নেতা হত্যার বিচার করেছেন। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে অনেকের বিচার হয়েছে। সুতরাং আজ আসুন, আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাই। আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করে, কলুষমুক্ত করে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করি।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, কাল বা পরশু খবরের কাগজে দেখলাম, খন্দকার মোশতাকের উত্তরসূরি খন্দকার মোশাররফ বলে, ‘আওয়ামী লীগের পতন হবে এবং এবার পতন হলে নাকি ৬৩ বছরেও আর ক্ষমতায় আসতে পারব না।’ ঠিক আছে, উনি কবে শিকা ছিড়বেন সেটার দিকেই আমরা তাকিয়ে থাকব। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় সংকটকে সম্ভাবনায় রূপান্তরিত করেন। সংকটকে সম্ভাবনায় রূপান্তরিত করে তিনি বাংলাদেশ এগিয়ে নিয়ে যাবেন। দেখবেন, শুধু পাকিস্তানই নয়, পৃথিবীর অনেক দেশই বলবে, ‘মুজে বাংলাদেশ বানাদো’।

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, এ ছাত্রলীগ সেই ছাত্রলীগ নয়। এ যুবলীগ সেই যুবলীগ নয়। তিনি বলেন, স্বাধীনতার জন্য আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি ত্যাগ কেউ স্বীকার করেনি। ছাত্রলীগের চেয়ে বেশি ত্যাগ কেউ করেনি। কিন্তু নতুন প্রজন্ম যখন এলো, শুধু টাকা টাকা আর টাকা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের এ অবক্ষয় অবশ্যই রোধ করতে হবে। যুবলীগ-ছাত্রলীগের দু-চারজন কি করল তার জন্য গোটা সংগঠনের বদনাম সমীচীন নয়।

সভাপতির বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমার পিতাকে শেষ সময়ে আমি দেখতে পাইনি। জানাজা করার সুযোগ আমার হয়নি। ক্যাপ্টেন মুসনুর আলীর সেই হতভাগ্য সন্তান আমি। কিন্তু আমার অহংকার আছে, গর্ব আছে- মোশতাকের মতো কোনো বেইমানের সন্তান আমি নই।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা অন্ধকারের বাংলাদেশকে আলোকিত করেছেন। তাই বলতে চাই, যতদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আছে বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ এগিয়ে যাবে।

বিএনপির সমালোচনা করে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, শকুনের দোয়ায় গরু মরে না। আপনারা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন, আন্দোলনে পরাজিত হয়েছেন। চক্রান্ত করেও জয়ী হতে পারবেন না। বাংলার মানুষ শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে। আগামীতে আমরা সব অপশক্তিতে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করব ইনশাআল্লাহ।

Comments (০)
Add Comment