আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ভারতের অবদানের প্রতিদান হিসেবে রেল ট্রানজিট দিয়েছে। এর বিনিময়ে বাংলাদেশ কোনো কিছু আদায় করতে পারেনি।
বিনা শর্তে, এমনকি প্রায় বিনা মাসুলে ট্রানজিট দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্যে করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম চরমোনাই পীর।
বুধবার (৩ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে সংগঠনটি আয়োজিত জাতীয় সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, বর্তমান সরকারের সৃষ্ট নানাবিধ সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ ভারত সফর সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। যে চুক্তিগুলো করা হয়েছে, তাতে কোনো আওয়ামী লীগারও বাংলাদেশের স্বার্থ দেখাতে পারছে না। কানেক্টিভিটির নামে যা করা হয়েছে, তার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষায় পরিষ্কার হয়েছে বাজার-টাজার করতে যাওয়া ও ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া এর মূল লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী যখন সীমানাবিহীন ইউরোপের দৃষ্টান্ত দেখান তখন সীমানা ও স্বাধীনতা নিয়ে আমরা শঙ্কিত না হয়ে পারি না।
তিনি বলেন, তিস্তা, গঙ্গার পানি নিয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়া, সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ না হওয়া, সেভেন সিস্টারে আমাদের বাণিজ্য সম্ভাবনা নষ্ট করা এবং নিজেদের নিরাপত্তা ঝুঁকি, কৌশলগত ভূ রাজনীতির নানা জটিলতার মধ্যেও যেভাবে ট্রানজিট দেওয়া হয়েছে তাতে বাংলাদেশের স্বাধীন সত্ত্বা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। বর্তমান সরকার স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবাংলার চেয়েও গুরুত্বহীন করে ফেলেছে।
চরমোনাই পীর আরও বলেন, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ইউপিআই চালুর মাধ্যমে দেশের ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার পাঁয়তারা করা হয়েছে। পানি বণ্টন নিয়ে যে যৌথ কমিটি করা হয়েছে তা নিছক সস্তা ও বহুল ব্যবহৃত একটি আইওয়াশ। তিস্তা প্রকল্প ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার পাঁয়তারা করা হয়েছে।
চরমোনাই পীর আরও বলেন, এই নির্মম ও কঠিন বাস্তবতাকে সামনে রেখে আমাদের চুপ থাকার সুযোগ নেই। এই সরকার ফেরাউনি স্টাইলে যে নির্যাতন নিপীড়ন করে তার শিকার আমরা কম-বেশি সবাই। তারপরেও প্রিয় স্বদেশ যখন তার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখে, তখন রুখে দাঁড়ানো আমাদের সবার সমান দায়িত্ব। আমরা যখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে কোনো জালিমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি, বিজয় আমাদেরই হয়েছে।